Coronavirus

জোগান কম, জেলে জুটছে না মাছ-মাংস

জোগান না-থাকায় টান পড়ছে আমিষের পাতে। ডাল, নানা আনাজ আর ভাত দিয়েই পাত ও পেট ভরছে বন্দিদের।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০৬:০১
Share:

আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।

তাঁরা তো লৌহকপাটের আড়ালে বন্দিই। কারাগারের বাইরেও চলছে রাজ্যজোড়া, দেশজোড়া বন্দিদশা— লকডাউন। টান পড়ছে বাজারে। তার জেরে জেলের বাসিন্দাদের পাত থেকে উধাও হতে বসেছে আমিষ। তাঁদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে নিরামিষেই।

Advertisement

এমনিতে জেলে আমিষ-নিরামিষ মিলিয়েই তৈরি হয় খাদ্যতালিকা। বন্দিদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে খাবারের পরিমাপ এবং গুণগত মান স্থির করে কারা দফতর। সেই অনুযায়ী কারাবাসীদের জন্য ভোরবেলায় রান্না চাপে। হেঁশেল সামলানোর দায়িত্ব থাকে বন্দিদের উপরেই। তত্ত্বাবধানে থাকেন জেলের কর্মী-আধিকারিকেরা। উৎসবে তো বটেই, বিশেষ দিনেও নিয়মিত বদল আসে খাদ্যতালিকায়।

কিন্তু করোনার চোখরাঙানিতে লকডাউন চেপে বসায় নানান সামগ্রীর জোগান নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন কোনও কোনও জেলের কর্তৃপক্ষ। জোগান না-থাকায় টান পড়ছে আমিষের পাতে। ডাল, নানা আনাজ আর ভাত দিয়েই পাত ও পেট ভরছে বন্দিদের। কয়েকটি জেলে আটার জোগান নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল কর্তৃপক্ষের। তা অনেকটা মিটেছে

Advertisement

বলে কারা দফতরের একাংশের দাবি। কিন্তু সমস্যা বাড়ছে মাছ-মাংসের জোগান নিয়ে। কোনও কোনও জায়গায় মাছ-মাংস জেলের গেট পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। এমনকি কোথাও কোথাও প্রয়োজনীয় ডিমের জোগানেও সমস্যা রয়েছে বলে কারা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে বিভিন্ন সামগ্রীতেই যে টান পড়তে পারে, তা মেনে নিচ্ছেন কারা দফতরের কর্তাদের অনেকে। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘লকডাউনে সমস্যা হচ্ছে। তবে পেট তো আর লকডাউনের দিন গুনবে না। ফলে আমিষ খাবারে টান পড়লেও নিরামিষ খাবারের ব্যবস্থা করতে যাতে সমস্যা না-হয়, তার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’

কারা দফতর সূত্রে ভিন্ন ধরনের একটি ব্যাখ্যাও উঠে আসছে। জেলে রান্নার জন্য সাধারণত অনেক কম দামেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করেন ঠিকাদারেরা। দরপত্রের মধ্যে থেকেই তাঁরা সেই ব্যবস্থা করেন। কিন্তু লকডাউনের দরুন নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রীর দামে হেরফের হয়েছে, হচ্ছে। ফলে আগের মতো লভ্যাংশ না-ও মিলতে পারে। সেই জন্যই অনেক ঠিকাদার কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম ভাবে জোগানে ঘাটতি প্রমাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে কোনও কোনও কারা আধিকারিকের পর্যবেক্ষণ। যদিও ঠিকাদারেরা বলছেন, ‘‘বিভিন্ন জেলে যে-পরিমাণে বিভিন্ন সামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে, লকডাউনের ফলে তার সবটা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সমস্যা হচ্ছে। এর সঙ্গে লাভের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন