CPM

সিপিএমেও নবীন-প্রবীণ! বুদ্ধদেব এবং সীতারামের স্মরণানুষ্ঠানের বক্তা তালিকায় নেই পক্বকেশ নেতা, তরুণদের এগিয়ে দিল আলিমুদ্দিন

সিপিএম ঘোষণা করেছে, বুদ্ধদেব এবং সীতারামের স্মৃতিচারণা করবেন ১১ জন। তাঁরা সকলেই নবীন প্রজন্মের। একমাত্র প্রবীণ বলতে থাকছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তবে তিনি সভাপতির ভূমিকা পালন করবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৫
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক বহুলচর্চিত। এই বিতর্কের জেরে শাসকদলের একটি অংশ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রবীণদের একেবারে বাদ দিতে পারেননি। তবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শাসকদল সিপিএম নিঃশব্দে প্রবীণদের সরিয়ে দিয়ে নবীন প্রজন্মকে সামনে নিয়ে চলে এল। উপলক্ষ, প্রয়াত দুই প্রবীণ নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান।

Advertisement

গত বছর ৮ অগষ্ট প্রয়াত হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এক মাস পর ১২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম। দুই নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে রাজ্য সিপিএম প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সেই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। পাশাপাশি দুই নেতার স্মৃতিচারণও করা হবে সেদিন। হুগলির কোন্নগর রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠিত হতে চলা সেই কর্মসূচির বক্তা তালিকায় নাম নেই কোনও পক্ককেশ নেতার। সিপিএম ঘোষণা করেছে, ওই দিন বুদ্ধদেব এবং সীতারামের স্মৃতিচারণা করবেন ১১ জন। তাঁরা সকলেই নবীন প্রজন্মের। একমাত্র প্রবীণ বলতে থাকছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তবে তিনি সভাপতির ভূমিকা পালন করবেন। সেলিমের কথায়, ‘‘আমিও কিন্তু বক্তা নই। আমি রাজ্য সম্পাদক হিসেবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করব। সূত্রধর হিসেবে কাজ করব।’’

বক্তা তালিকায় রয়েছে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দীপ্সিতা ধর, এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, পাণ্ডুয়ার প্রাক্তন বিধায়ক আমজাদ হোসেন, এসএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি প্রণয় কর্য্যি, যুব নেতা অয়নাংশু সরকার, সরোজ দে, সপ্তর্ষি দেব (প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের পুত্র), সৌভিক দাস বক্সী, প্রতীক-উর রহমান এবং হুগলির তরুণ নেত্রী নবনীতা চক্রবর্তীর নাম। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকের নাম নেই তালিকায়। আবার যে হুগলিতে কর্মসূচি হবে, সেই জেলারও প্রথম সারির ছাত্র-যুব নেতাদের রাখা হয়নি। সিপিএম সূত্রে খবর, এই কর্মসূচিতে নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর প্যানেল আলোচনা হবে।

Advertisement

আনুষ্ঠানিক ভাবে সেলিম বলেছেন, ‘‘নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আনতেই এই ভাবনা। অতীতে কখনও এমন হয়নি।’’ তবে এর বাইরেও নানাবিধ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন সিপিএম নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, এই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের অনেককে প্রার্থী করা হবে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে। যে কোন্নগরে কর্মসূচি, সেটি উত্তরপাড়া বিধানসভার মধ্যে পড়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপাড়ায় সিপিএমের ভোট ছিল ৫০ হাজারের বেশি। সেই কেন্দ্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পাণ্ডুয়াকেও। পাণ্ডুয়ায় ১০ বছর বিধায়ক ছিলেন আমজাদ। ফের তাঁকেই প্রার্থী করার কথা ভাবছে সিপিএম। উত্তরপাড়ায় প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে এক ছাত্রনেতা বিভিন্ন মহলে ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন বলেও সিপিএম সূত্রে জানা যাচ্ছে। এই ছাত্রনেতা ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেও আশায় ছিলেন, তাঁকে হুগলি কেন্দ্রে প্রার্থী করা হবে, কারণ তার আগের পঞ্চায়েত ভোটে বলাগড়ে তিনি ‘বৈপ্লবিক’ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সে বারও আশাপূরণ হয়নি। আর বক্তা তালিকা বলছে, আশা নেই এ বারও। উত্তরপাড়ায় অন্য কোনও পরিচিত মুখকে প্রার্থী করা হতে পারে। জল্পনায় ভাসছে মিনাক্ষী এবং দীপ্সিতার নামও। তেমনই প্রণয়কে কোচবিহারের কোনও আসনে, সরোজকে উত্তর হাওড়ায়, সৃজনকে যাদবপুরে প্রার্থী করা হতে পারে।

যে কোনও অঙ্কেই হোক, দুই নেতার স্মরণানুষ্ঠানের বক্তা তালিকা থেকে পক্ককেশ নেতাদের পুরোপুরি সরিয়ে দিল সিপিএম। যাঁদের রাখা হল, তাঁদের বেশিরভাগেরই বুদ্ধদেব বা সীতারামের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে কাজের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। তবে দীপ্সিতার মতো কেউ কেউ দিল্লিতে সীতারামের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পেয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement