ফাইল চিত্র। পিটিআই।
নিরাপত্তার স্বার্থেই কথা ছিল আমপান আছড়ে পড়ার পরের ২৪ ঘন্টা হাওড়ায় বিশেষ ট্রেন ঢোকানো যাবে না। বুধবার আমপান-তাণ্ডবের পরে ২৬ মে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ ট্রেনগুলি না পাঠানোর অনুরোধ করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার এই মর্মে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদবকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।
শনিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২৭ তারিখ থেকে ট্রেন নেব। কারণ, যাঁরা আসবেন, তাঁদের তো বাড়িতে পৌঁছতে হবে। দুর্যোগে রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের কাজ করতে হচ্ছে। সেই কারণে কয়েকটা দিন সময় লাগবে।”
বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক এবং আটকে থাকা মানুষদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু আমপানে বিধ্বস্ত রাজ্যের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ মে পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনগুলি না পাঠাতে অনুরোধ করল রাজ্য। রেলবোর্ডকে চিঠি দিয়ে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, আমপান রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিকাঠামোর ক্ষতি করেছে। ফলে জেলা প্রশাসন ত্রাণ এবং উদ্ধারের কাজে ব্যস্ত। তার মধ্যে বিশেষ ট্রেনগুলি গ্রহণ করা প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব হবে না।
মুখ্যসচিবের পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে এ দিন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘রেল প্রস্তুত রয়েছে। রাজ্য সরকার সবুজ সঙ্কেত দিলেই পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশ্যে শ্রমিক স্পেশাল চালানো হবে।’’
আরও পড়ুন: ‘জাতীয় বিপর্যয়’ তকমার চেয়ে অর্থই জরুরি, মত তৃণমূলের
দিন কয়েক আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কোনও শ্রমিক স্পেশাল পাঠাতে পারে রেল। ফলে চাইলে পশ্চিমবঙ্গের আপত্তি সত্ত্বেও শ্রমিক স্পেশাল পাঠাতে পারে রেল মন্ত্রক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করে এই মুহূর্তে রাজ্যের উপর কোনও ট্রেন
চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় রেল মন্ত্রক। চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আশা করছি ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত পুনর্গঠনের কাজ শেষ হলেই ওই ট্রেনগুলি চালানো সম্ভব হবে।’’ তবে শ্রমিক স্পেশাল বন্ধ থাকলেও, দিল্লি-হাওড়া বিশেষ এসি ট্রেনের পরিষেবা চালু রয়েছে।
রাজ্য সরকারের দাবি, আমপানের পরে চলতি পরিস্থিতিতে এখন ট্রেনগুলি এলে কোভিড-বিধি মেনে প্রত্যেকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে সংশ্লিষ্টদের বাড়ি পৌঁছনোর কাজ করা কার্যত অসম্ভব।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২৭ তারিখ থেকে যাঁরা বিশেষ ট্রেনগুলিতে আসবেন, ১৪ দিন নিজের বাড়িতেই তাঁদের আলাদা থাকতে হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসন তাঁদের প্রত্যেকের উপর নজর রাখবে। স্টেশনে থার্মাল গানের মাধ্যমে স্ক্রিনিং-এর পরে প্রত্যেককে নিজের নিজের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে সরকার। তার পরে সংশ্লিষ্ট জেলাতেই তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং লালারস নমুনা সংগ্রহের কাজ হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আপনার বাড়িই হবে আপনার কোয়রান্টিন সেন্টার। দুর্যোগের পরে সব ধরনের পরিকাঠামোর পরিস্থিতি ভাল নয়। কোথায় আর আলাদা করে কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়ব।”