আমপানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড কলকাতা। ছবি: পিটিআই।
কী নামে ডাকা হল, তাতে কী এসে যায়! পশ্চিমবঙ্গে আমপান ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রের তরফে যথাযথ আর্থিক সাহায্য করাটাই আসল বলে মনে করছেন রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আমপান ঘূর্ণিঝড়ের পরে রাজ্যের পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবি নিয়ে এই অবস্থানই নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।
গত কালই সনিয়া গাঁধীর ডাকে ২২টি অ-বিজেপি দলের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে প্রস্তাব পেশ হয়েছে। বৈঠকের শুরুতে যখন এই প্রস্তাব পাশ হয়, তখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে যোগ দেননি। তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন হাজির থাকলেও এই বিষয়ে নীরব ছিলেন। রাজ্য সরকার বা তৃণমূল কংগ্রেসও একে সরাসরি ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবি তোলেনি।
রাজ্য সরকারের অভিমত, রাজ্যে করোনাভাইরাস নামক জাতীয় বিপর্যয় চলছেই। তাই ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কাকে ফের ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দরকার নেই। তবে এই অবস্থানের একটা রাজনৈতিক ব্যাখ্যাও মিলছে। তা হল, করোনা-সঙ্কটকে কাজে লাগিয়েই নরেন্দ্র মোদী সরকার নানা ভাবে মমতা সরকারের কাজকর্মে ‘হস্তক্ষেপ’ করছে। তা নিয়ে প্রতি পদক্ষেপে, প্রতি মুহূর্তে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত বাঁধছে। এর পরে আমপানকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণা করা হলে কেন্দ্রের সেই হস্তক্ষেপ আরও বাড়বে। আগামী বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার নিজে থেকে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিলে, রাজ্য ও তৃণমূলের বিড়ম্বনাই বাড়বে।
আরও পড়ুন: শ্মশানে ছুটে প্রাণ রক্ষা সে রাতে! ঘূর্ণির কক্ষপথে ত্রাসের প্রতিধ্বনি
বস্তুত এই কারণেই শুক্রবারের বিরোধী শিবিরের বৈঠকে সুকৌশলী অবস্থান নিয়েছিল তৃণমূল। বৈঠকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবিতে প্রস্তাব পেশ নিয়ে আগেই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস, শিবসেনা, এনসিপি ও বাম দলের মধ্যে আলোচনা হয়ে গিয়েছিল বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। তা মেনেই সনিয়া এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। গুলাম নবি আজাদ প্রস্তাব পাঠ করেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও দলের নাম বা নেতার স্বাক্ষর রাখা হয়নি।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, কোনও আইন বা নিয়মে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে জাতীয় বিপর্যয় তকমা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে সাম্প্রতিক অতীতে উত্তরাখণ্ডের হড়পা বান বা অন্ধ্রের হুদহুদকে অভূতপূর্ব বা বিরল মাপের দুর্যোগ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে একটি দুর্যোগ ত্রাণ তহবিল তৈরি হয়। তাতে চার ভাগের তিন ভাগ অর্থই কেন্দ্র দেয়। বাকি এক ভাগ দেয় রাজ্য। তহবিলে টান পড়লে বাকি অর্থ কেন্দ্রই জোগায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy