DA Case in Supreme Court

ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার নয়! সুপ্রিম কোর্টে অবস্থান জানাল রাজ্য, বুধে বলবে মামলাকারী পক্ষ

সোমবার ডিএ-শুনানিতে শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে, কেন সময়ে টাকা দেওয়া হল না? রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, আদালতের নির্দেশ তারা কার্যকর করতে চায়। কিন্তু সময় লাগবে। কারণ, ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৫ ১৭:৫৬
Share:

ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার নয়! সুপ্রিম কোর্টে অবস্থান জানাল রাজ্য। —ফাইল চিত্র।

মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে মঙ্গলবার শুনানি হবে বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেইমতো দিনভর এই মামলার শুনানি হল বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে। সোমবারই আদালত জানিয়েছিল, মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে মঙ্গলবারের মধ্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। মঙ্গলবার রাজ্যের বক্তব্য শোনে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।

Advertisement

রাজ্যের তরফে মূলত তিনটি যুক্তি দেওয়া হয়। এক, ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার নয়। দুই, ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আইনি অধিকার নেই। এবং তিন, রাজ্য অবস্থা বুঝে সব দিক বিবেচনা করে ডিএ দেয়। রাজ্য কিসের ভিত্তিতে ডিএ দিতে চায়, তা জানতে চান বিচারপতি পিকে মিশ্র। রাজ্যের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে তিনি বলেন, “ভোক্তা মূল্য সূচক বা সিপিআই (কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স) মেনে না-দিলে কোন অঙ্কে ডিএ দিতে চায় রাজ্য? মঙ্গলবার রাজ্যের বক্তব্য শুনেছে শীর্ষ আদালত। বুধবারও ডিএ মামলার শুনানি হবে। ওই দিন মামলাকারী, অর্থাৎ সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।

ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে রাজ্যকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। ছ’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য টাকা দিতে পারেনি। বরং আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সোমবার সেই সংক্রান্ত শুনানিতে আদালত প্রশ্ন তোলে, কেন সময়ে টাকা দেওয়া হল না। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, আদালতের নির্দেশ তারা কার্যকর করতে চায়, কিন্তু সময় লাগবে। কারণ, ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থ জোগাড় করতে সময় লাগবে। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। সোমবার আদালত জানতে চায়, ডিএ মামলার শুনানির জন্য কোন পক্ষের কত সময় লাগবে? প্রয়োজনে কিছুটা সময় দিয়ে সোমবারই বেলা ১২টা থেকে শুনানির ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। পরে বিচারপতি জানিয়ে দেন, আর কাউকে কোনও সময় দেওয়া হবে না। মঙ্গলবারই এই মামলার শুনানি হবে।

Advertisement

গত ১৬ মে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। রাজ্যের তরফে প্রবল আপত্তি জানিয়ে বলা হয়েছিল, লক্ষ লক্ষ কর্মচারীকে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দিতে গেলে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে এমন কোনও বরাদ্দ নেই। রাজ্যকে যদি এই অর্থ দিতে হয়, তা হলে ঋণ নিতে হবে, যার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি দরকার। এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। তা ছাড়া রাজ্যের যুক্তি ছিল, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়। ঐচ্ছিক বিষয়। এটি কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। তাই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে বাধ্য নয় রাজ্য। ডিএ নিয়ে আরওপিএ ২০০৯ নিয়মাবলির উল্লেখও করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বলা হয়েছিল, রাজ্য এই নতুন নিয়মাবলি চালু করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, কত হারে ডিএ বৃদ্ধি পাবে, তা রাজ্য নির্ধারণ করে থাকে। কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয়, তা রাজ্যের উপর প্রযোজ্য নয়, কারণ, কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক কাঠামো ভিন্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement