Kolkata Bus Service

গঙ্গাসাগরের জন্য তোলা হয়েছে প্রচুর বাস, প্রবল দুর্ভোগে ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা

গঙ্গাসাগর মেলায় পাঠানোর জন্য শহরের বিভিন্ন রুট থেকে প্রায় ১২০০ সরকারি ও বেসরকারি বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছ’শোরও বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রাস্তায় প্রতিদিন কম সংখ্যক বাস নামছে, এমন অভিযোগ ছিলই। দিনের বেলায় কিছু বাস নামলেও রাত বাড়লেই সেগুলি উধাও হয়ে যায় বলেও অভিযোগ। যার জেরে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি চলছিলই। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। সপ্তাহখানেক আগে শহরের এক হাজারেরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি বাস সাগরে পাড়ি দেওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। ফলে, রাস্তায় বেরিয়ে কখনও বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে আধ ঘণ্টা, কখনও বা আরও বেশি।

Advertisement

জানা গিয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলায় পাঠানোর জন্য শহরের বিভিন্ন রুট থেকে প্রায় ১২০০ সরকারি ও বেসরকারি বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছ’শোরও বেশি। উত্তরের রুটগুলিতে তা-ও পরিষেবা কিছুটা স্বাভাবিক রাখা গেলেও দক্ষিণের একাধিক রুট থেকে বেশি সংখ্যক বাস তুলে নেওয়ায় ওই এলাকায় সমস্যা বেড়েছে। ফলে, বিভিন্ন কাজে রাস্তায় বেরিয়ে প্রবল ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে আমজনতা। ১৮ নম্বর রুট (সরশুনা-এসপ্লানেড), এসডি-৮ (নবদিগন্ত-বিবিরহাট), এসডি-৭৬ (আমতলা-আনন্দপুর) ছাড়াও ঠাকুরপুকুর থেকে সাঁপুইপাড়া, ঘটকপুকুর থেকে ধর্মতলা, বড়িশা থেকে শিয়ালদহের প্রচুর বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। বাস তোলা হয়েছে আরও কিছু রুট থেকেও।

প্রতিদিন বাসেই বেহালা থেকে ধর্মতলার অফিসে আসেন মহুয়া অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছর যাঁরা রাস্তাঘাটে চলাফেরা করেন, তাঁরা জানেন, শহরের গণপরিবহণের কী দুরবস্থা! অন্য সময়ে তা-ও কিছু ক্ষণ দাঁড়ানোর পরে বাস মেলে, যদিও তাতে বাদুড়ঝোলা হয়ে যেতে হয়। গত ক’দিন ধরে তা-ও মিলছে না। এক-দু’দিন অ্যাপ-ক্যাবে যাতায়াত করা যায়। রোজ রোজ তো সেটা সম্ভব নয়।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন বাসমালিকদের একাংশও। দক্ষিণের রুটগুলি থেকে বেশি সংখ্যক বাস গঙ্গাসাগরে চলে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরাও। এক বাসমালিকের কথায়, ‘‘প্রশাসন বাস চাইলে তো আমাদের না দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। প্রতিটি রুট থেকে কিছু কিছু করে বাস নিলে সমস্যা হয় না। কিন্তু কোনও রুট থেকে যদি সব বাস তুলে নেয়, তা হলে সমস্যা হবেই। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও কিছু করার নেই।’’

Advertisement

কিন্তু কবে স্বাভাবিক হবে এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি? আরও এক সপ্তাহের আগে আশা দেখছেন না বাসমালিকদের সংগঠনের কর্তারাও। মেলা শেষে ১৬ তারিখ থেকে বাসগুলি ফিরতে শুরু করবে। তবে, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে তার পরেও দু’-এক দিন লাগবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বললেন, ‘‘আগেও আমরা বহু ক্ষেত্রে কয়েকটি রুটের বদলে প্রতিটি রুট থেকে অল্প সংখ্যায় বাস নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। তা হলে আর নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি এতটা বাড়ে না। হাতে গোনা কয়েকটি বাস নিয়ে যে ভাবে যাত্রী-পরিষেবা দেওয়া যায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।’’

তবে, পরিবহণ দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘সমস্যা যাতে না হয়, আমাদের তরফে সেই মতো পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিকল্প কিছু ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন