ফাইল চিত্র।
হাঁফ ছাড়ছেন সকলেই। কেউ ভোরে বেরিয়ে ফুলপাতি উৎসবের ধূপধুনো, ফুল, সরঞ্জাম কিনছেন। কেউ দোকান খুলে সাফসুতরো করতে ব্যস্ত। শুধু অন্য বারের মতো পর্যটকদের ভিড়ে জমজমাট ছবিটাই যা দেখা যাচ্ছে না। পাহাড়ের আশা, একবার বন্ধ যখন উঠেছে, পর্যটকদের ভিড়ও ফিরবে।
পাহাড় অবশ্য একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছিল। বুধবার ভোরবেলাতেই আনাজ, ফলের দোকান খুলেছে। চকবাজারে লোক বেরিয়ে পড়েছে কেনাকাটায়। চকবাজার ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে গাড়ির চালক, কর্মীদের ব্যস্ততা। বেসরকারি ট্যাক্সি বুথ খুলেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ দিন দার্জিলিং, কার্শিয়াং-সহ পাহাড়ের সর্বত্রই বাজারে ভিড় বেড়েছে। মোহন দর্জি বললেন, ‘‘এখন পর্যটকেরা ফিরলেই জীবনটা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে।’’
যাঁদের হোটেল বা হোম স্টে রয়েছে, তাঁরা কাল রাত থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন। কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কেউ। কেউ ঘরবাড়ি পরিষ্কার করেছেন। অনেকে পুরনো পর্যটকদের ই-মেল করছেন। নগেন তামাঙ্গ হনহন করে বাজার থেকে ফিরছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে ফিরেই কম্পিউটার খুলে দেখব, পর্যটকদের কোনও মেল এসেছে কি না।’’
এ দিন পাহাড়ে রীতি মেনে ফুলপাতি উৎসবও হয়েছে। নতুন পোশাকে মেতে ওঠে পাহাড়বাসী। তবে এত দিনের বন্ধের জন্য উৎসবের রং একটু ফিকে। সকালে চকবাজার হয়ে ফুলপাতির বিরাট বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বার হয় ফি বছর। এ বার তা দেখা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট একাধিক শোভাযাত্রা ম্যাল হয়ে মহাকাল মন্দিরে গিয়েছে। আবার সেখান থেকে মিছিল করে ফেরে।
এ দিন পাহাড় থেকে সমতলে এদিন প্রচুর গাড়িতে করে বাসিন্দারা আসা যাওয়াও করেছেন। চৌরাস্তা ও ম্যালে যাওয়ার রাস্তায় ক্যাভেন্টার্স, গ্লেনারিসের মতো রেস্তোরাঁ দু’টিতে লোকজনের আনাগোনা এদিন বেড়েছে। এই রেস্তোরাঁগুলো অবশ্য দিন তিনেক আগে থেকেই খুলেছিল। হোটেল মালিক সংগঠনের এক নেতা সমীর সিংহল বলেন, ‘‘পাহাড় খুলেছে খবর পেয়ে বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থাগুলি খোঁজ নিচ্ছে। কিন্তু পর্যটকরা না এলে লাভ হবে না।’’
এ দিন থেকে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে ‘কুইন অব হিলস’। তাই এ বার পুজোর পরেই পর্যটন মরসুমের বোধন হবে বলে আশায় পাহাড়।