মৃত শিশু সাকিব। (ডান দিকে) অভিযুক্ত কোহিনূর বিবি। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে শুক্রবার সকালে ‘নিখোঁজ’ হয়েছিল তিন বছরের শিশুটি। রাতে মৃতদেহ মিলল তার কাকিমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে, একটি ট্রলিব্যাগের ভিতর।
সাকিব শেখ নামে হুগলির পান্ডুয়ার রওজাপাড়া এলাকার ওই শিশুটির ছোট কাকিমা কোহিনূর বিবি, তার আত্মীয় তাজমিনা বিবি এবং তাজমিনার স্বামী আজিজুল শেখকে শনিবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়। কোহিনূরকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে পান্ডুয়া থানায় বিক্ষোভ দেখায় জনতা।
পুলিশের দাবি, জেরায় কোহিনূর জানিয়েছে, তার ধারণা ছিল, তার মেয়ের থেকে সাকিবকেই সবাই বেশি ভালবাসে। সে তা মানতে পারেনি। সে জন্যই সাকিবকে ঘরের ভিতরে গলায় ওড়না জড়িয়ে খুন করে। তার পর দেহটি ট্রলিতে ভরে পাচার করে দেয় ডেলোগাছি এলাকায় মাসতুতো দিদি তাজমিনার শ্বশুরবাড়িতে। শিশুটির বাবা আজিজ শেখ এবং তাঁর দুই ভাই মুম্বইতে সোনা-রুপোর কাজ করেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ সাকিব ‘উধাও’ হয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যু নিশ্চিত করতে কোপও সারফুদ্দিনকে
দুপুরে পান্ডুয়া থানায় অভিযোগ জানান তার মা শবনম বিবি। সাকিবের অপহরণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শুরু হয় তল্লাশি। সন্ধ্যায় পুলিশ খবর পায়, ডেলোগাছিতে তাজমিনার শ্বশুরবাড়িতে এক মহিলা একটি ট্রলিব্যাগ রেখে গিয়েছেন। পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে খাটের তলা থেকে সবুজ-কালো ট্রলিব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে আসে সাকিবের দেহ।
এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে সাকিবের দেহ।
তদন্তকারীদের দাবি, সাকিবের বাবার সঙ্গে তাঁর ছোট ভাইয়ের জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ রয়েছে। দুই জায়ের মধ্যেও বনিবনা ছিল না। পুলিশের ধারণা, কোহিনূর ভেবেছিল, কেউ তাকে সন্দেহ করবে না। একটি টোটোতে ব্যাগটি নিয়ে দেহটি ফেলে দিতে যাচ্ছিল সে। কিন্তু পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। ট্রলিতে শিশুর দেহ আছে জেনেও তাজমিনা এবং তার স্বামী চেপে যায়। ওই তিন জনের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপের ধারা যোগ করার জন্য আজ, রবিবার আদালতে আবেদন করা হবে।
আরও পড়ুন: আন্দামানে প্রবল ঝড়, আটকে কয়েকশো বাঙালি পর্যটক
সাকিবের মা শবনম এ দিন বলেন, ‘‘ছোট জা-ই সাবিককে খুন করেছে।’’ আর কোহিনূরের তিন বছরের মেয়ের কথায়, ‘‘দাদা দুষ্টুমি করছিল বলে মা মেরেছে।’’