কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
‘পোস্টিং’ বিতর্কে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দুই জুনিয়র ডাক্তার। অভিযোগ, নিয়ম মেনে কাউন্সেলিংয়ের পরেও তাঁরা পছন্দের জায়গায় ‘পোস্টিং’ পাননি। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া শুক্রবার হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে আদালত। বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে (৫ জুন) এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা, তার অন্যতম ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিলেন দেবাশিস, আসফাকুল্লারা। সম্প্রতি তাঁদের ‘পোস্টিং’ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। অভিযোগ, কোথায় নিয়োগ চান, নিয়ম মেনে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় তা সিনিয়র রেসিডেন্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা জানিয়েওছিলেন। কিন্তু তার পরেও শুধুমাত্র তিন জন পছন্দের জায়গায় ‘পোস্টিং’ পাননি। ঘটনাচক্রে, তিন জনই আরজি কর আন্দোলন পর্বে প্রথম সারিতে ছিলেন। দেবাশিস, আসফাকুল্লা ছাড়াও এই তালিকায় আছেন আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো। পছন্দের জায়গায় যদি ‘পোস্টিং’ না দেওয়া হয়, তবে কাউন্সেলিংয়ের মানে কী? প্রশ্ন তুলেছেন দেবাশিস, অনিকেতরা। এখনও পর্যন্ত অনিকেতের তরফে হাই কোর্টে মামলা হয়নি। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএফ সূত্রে খবর, অনিকেতও একই ভাবে মামলা করবেন।
কাউন্সেলিং না মেনে ‘পোস্টিং’ দেওয়ায় স্বাস্থ্য ভবন ‘অনৈতিক’ কাজ করেছে, অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের। এর প্রতিবাদে ডব্লিউবিজেডিএফ-এর তরফে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানেই বসেছিলেন দেবাশিসরা।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক দেবাশিসের ‘পোস্টিং’ হয়েছে মালদহের গাজোলে। অভিযোগ, কাউন্সেলিংয়ে হাওড়ায় নিয়োগের কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু মেধাতালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, গাজোলে ‘পোস্টিং’ হয়েছে। একই ভাবে পছন্দের জায়গায় নয়, অন্যত্র পোস্টিং হয়েছে আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম দুই মুখ অনিকেত এবং আসফাকুল্লারও। অনিকেত জানান, সিনিয়র রেসিডেন্টদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার পরে তিন বছরের ‘বন্ড’ থাকে। সেই বন্ড অনুযায়ী সরকারের তরফে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কোথায় কাকে নিয়োগ করা হবে, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এবং মেধাতালিকার ভিত্তিতে তা ঠিক করা হয়। মেধাতালিকায় থাকা চিকিৎসকেরা পোস্টিংয়ের জন্য বেছে নিতে পারেন পছন্দের জায়গা। যাঁদের নাম তালিকার উপরের দিকে থাকে, তাঁরা আগে সুযোগ পান। কিন্তু এই তিন জনের ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া মানা হয়নি বলে অভিযোগ। এ বার সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলেন দেবাশিস, আসফাকুল্লা।