সোমবার বিজেপি যে ফের কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে, সে কথাও রবিবার উস্তির সভা থেকেই জানিয়েছেন দিলীপ। নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় বিজেপির ‘যাত্রা’ হবেই— দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তিতে ‘বিজয় সঙ্কল্প সমাবেশ’ থেকে ফের ঘোষণা করলেন দিলীপ ঘোষ। সোমবার বিজেপি যে ফের কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে, সে কথাও রবিবার উস্তির সভা থেকেই জানিয়েছেন দিলীপ। দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে যে নিরন্তর আলোচনা চলছে, সে ইঙ্গিতও দিলীপ ঘোষ দিয়েছেন।
বিজেপির প্রস্তাবিত গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার অনুমতি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় বিজেপির পক্ষে যাওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত যাত্রার অনুমতি মেলেনি। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু পরে চিঠি পাঠিয়ে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। শনিবার রাতে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই চিঠি পাওয়ার পরেই বিজেপি নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানিয়েছিলেন, গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা হবেই। রবিবারও সেই একই হুঙ্কার শোনা গেল দিলীপ ঘোষের গলায়।
যে ভাবে বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার অনুমতি আটকে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, তাতেই প্রমাণ হয় যে, এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই এবং ওই যাত্রা বাংলায় জরুরি— মন্তব্য দিলীপ ঘোষের। সাম্প্রদায়িক অশান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করে যে ভাবে বিজেপির যাত্রার অনুমতি প্রশাসন আটকে দিয়েছে, সেই আশঙ্কাকেও এ দিন ভিত্তিহীন বলেছেন দিলীপ ঘোষ। উস্তিতে বিজেপি জনসভা করল, কিন্তু কোনও অশান্তি কি হল— দিলীপ ঘোষ জনসভা থেকেই এই রকম প্রশ্ন তোলেন রবিবার। যে ভাবেই হোক, বিজেপি গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করবেই— চ্যালেঞ্জ দিলীপের।
উস্তিতে বিজেপি জনসভা করল, কিন্তু কোনও অশান্তি কি হল— দিলীপ ঘোষ জনসভা থেকেই এই রকম প্রশ্ন তোলেন রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি এ দিন জানিয়েছেন, বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা চলছে এবং তার ভিত্তিতেই যাত্রার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সোমবার বিজেপি যে আবার কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে, তা-ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, বোমা-গুলি-আগুন, রণক্ষেত্র পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না
আরও পড়ুন: ৬ বুথ বিজেপি এজেন্টহীন, অভিযোগ বাড়ি গিয়ে শাসানির, তৃণমূল বলল, ‘ওদের লোক নেই’
বিজেপির সভায় দিলীপ ঘোষ ছাড়াও ছিলেন দলের জাতীয় কার্যকারিণীর সদস্য জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন জয়ও। তবে উস্তিতে যাওয়ার আগে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ধর্মতলায় আর একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন জয়। ১৯৭১-এর যুদ্ধে ভারতীয় সেনার কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিন (বিজয় দিবস) উপলক্ষে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে জয় বলেন, ‘‘আমি সেনাবাহিনীর সদস্যের পরিবারের ছেলে। আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিল ১৯৭১ সালের সেই দিনটা, যে দিন পাকিস্তানি সেনাদের কোমরে দড়ি পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় বাহিনী। আর আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন হল সেই দিনটা, যে দিন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’