জখম এক পুলিশকর্মী।--নিজস্ব চিত্র।
এলাকার এক যুবকের প্রহৃত হওয়ার প্রতিবাদে এবং গঙ্গা পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের অপরাধমূলক কাজকর্ম রোধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সোমবার ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালাল জনতা। গভীর রাতের ওই ভাঙচুরের সময়ে মারধর করা হয় ফাঁড়ির পাহারাদার এবং এক কনস্টেবলকে। হামলায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ মঙ্গলবার চার জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তেলেনিপাড়ার বাসিন্দা শেখ সাহিদ উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর ঘাট থেকে লঞ্চে এ পারে আসছিলেন। লঞ্চে তিন যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কথাবার্তা থেকে দু’পক্ষের বচসা বাধে। এক যুবক সাহিদকে চড়-থাপ্পড় মারে বলে অভিযোগ। লঞ্চ তেলেনিপাড়া ঘাটে পৌঁছলেও মারধর থামেনি। এক ফাঁকে ওই যুবকদের হাত ছাড়িয়ে সাহিদ পালান। এলাকায় ফিরে স্থানীয় লোকজনকে ঘটনার কথা জানান। এর পরে সকলে মিলে ওই ফাঁড়িতে যান। দুই পুলিশকর্মী ঘাটে গিয়েও ওই তিন জনের খোঁজ পাননি। তাঁদের অনুমান, ফেরার লঞ্চে ওই তিন যুবক পালায়।
পুলিশ ঘাট থেকে ফিরতেই ওই যুবকদের গ্রেফতারের দাবিতে ফাঁড়ির সামনে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। জড়ো হয়ে যান জনা পাঁচিশ মানুষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ও পার থেকে আসা দুষ্কৃতীরা এলাকায় মদ, জুয়ার আসর বসাচ্ছে। অপরাধমূলক কাজকর্ম করে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয়। এ দিন সেই দুষ্কৃতীদেরই কয়েক জন সাহিদকে মারধর করে। বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন হঠাৎই ফাঁড়িতে হামলা চালায়। ফাঁড়ির বোর্ড, আলো, পুলিশকর্মীদের মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে প্রহৃত হন পাহারাদার কানুকান্ত তেলি এবং কনস্টেবল সমীর শীল। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চন্দননগরের এসডিপিও সৈকত ঘোষ এবং ভদ্রেশ্বরের ওসি দেবনাথ সাধুখাঁর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আধ ঘণ্টা ধরে চলা ওই গোলমালের জেরে আতঙ্কে মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, ওই এলাকায় অপরাধমূলক কোনও কাজকর্ম হলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে নিয়মমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। যে যুবককে মারধর করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তাঁকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে।
সাহিদ বলেন, “লঞ্চে ওই যুবকেরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আমাদের এলাকার নানা জনের নামে কুকথা বলছিল। আমি তার প্রতিবাদ করি। সেই কারণে ওরা মারধর করে। আমি পালিয়ে গিয়ে পাড়ায় বিষয়টি জানাই। কিন্তু কারা ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে বলতে পারব না।”