এক জনকে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি মারছে তিন জন। মার খেয়ে টলে পড়লে চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলে আবার চলছে উত্তমমধ্যম। ‘হোয়াটস অ্যাপ’-এ সেই মারধরের ভিডিও দেখে ভেঙে পড়েছিলেন ধূপগুড়ির আলু ব্যবসায়ী দুলাল ঘোষের পরিবার। আলুর বীজ কিনতে পঞ্জাবের জালন্ধরে যাওয়া দুলালবাবুকে অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য ১০ লক্ষা টাকা চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা। শেষ পর্যন্ত রফা হয়েছিল চার লক্ষ টাকায়। তবে সোমবার সকালে মুক্তিপণ দেওয়ার সময়েই ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধরা পড়েছে তিন জন অপহরণকারীও।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৯ নভেম্বর দুলালবাবু আলু বীজ কিনতে জালন্ধরে পৌঁছন। কয়েকদিন নানা বাজারে ঘোরাফেরা করার পরে তিনি গত ৪ ডিসেম্বর, শুক্রবার কর্তারপুরের হিমঘরের সামনে পৌঁছান। সেখানে একটি ছোট গাড়ি নিয়ে আচমকা চড়াও হয়ে চার দুষ্কৃতী তাঁকে অপহরণ করে পালায়। দুলালবাবুকে রাখা হয় জালন্ধর-পাঠানকোট জাতীয় সড়কের রায়পুর-বালান গ্রামের একটি হিমঘরে। পরিবার সূত্রের খবর, প্রথমে অপহরণকারীরা ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় এবং বিষয়টি পুলিশকে জানাতে নিষেধ করে। পরে দুলালবাবুকে মারধর করে তোলা হয় ভিডিও, যা পাঠানো হয় তাঁর স্ত্রী-র মোবাইলে। অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দিতে রাজি হলেও শুভানুধ্যায়ীদের পরামর্শে বাড়ির লোকজন লুকিয়ে ধুপগুড়ি থানার পুলিশকে ব্যাপারটা জানান।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বিশেষ দল তৈরি করে অপহৃতকে উদ্ধারের দায়িত্ব দেন। ওই দলটি পৌঁছয় জালন্ধরে। জালন্ধর পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা শুরু হয়। অপহরণকারীরা চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণে দুলালবাবুকে ছাড়তে রাজি হলে, টাকা দেওয়ার জায়গা ঠিক করা হয়। কথামতো টাকা নিয়ে বাড়ির লোকজন সেখানে পৌঁছন। দুষ্কৃতীরা টাকা নিতে গেলে সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ তিন জনকে ধরে ফেলে। এর পরে হিমঘরে ঢুকে হাত-পা বাঁধা দুলালবাবুকে উদ্ধার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় একাধিক মোবাইল। ততক্ষণে অবশ্য দুষ্কৃতীদের এক জন মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ব্যবসায়ীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে। পলাতক দুষ্কৃতীর খোঁজ চলছে।