ইভিপিতে ১০০-য় একশোরও বেশি!

বাংলায় ভোটারের সংখ্যা ৬.৯৮ কোটি। অথচ নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, তার থেকে বেশি সংখ্যক ভোটার কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

যতই ভাল লেখা হোক, একশোয় সর্বাধিক নম্বর একশোর বেশি হওয়া সম্ভব কি? অন্য কোথাও হোক না-হোক, সেটা অন্তত সম্ভব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ইভিপি বা ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে কর্মসূচি। ফলে তা নিষ্কণ্টক হয়নি। এমন চিত্র অনেক রাজ্যেই।

Advertisement

বাংলায় ভোটারের সংখ্যা ৬.৯৮ কোটি। অথচ নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, তার থেকে বেশি সংখ্যক ভোটার কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। অর্থাৎ ১০০ শতাংশের বেশি! তবে এ রাজ্যের কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ এবং মুর্শিদাবাদে তথ্য যাচাই ১০০ শতাংশ হয়নি। বরং চার, তিন এবং দু’ধাপ আগেই সমাপ্ত হয়েছে ইভিপি কর্মসূচি। সংশোধনের জন্য আবেদনপত্রের সংখ্যা ১.৪০ কোটি।

কেন এবং কী ভাবে ঘটে গেল এই আশ্চর্যজনক ঘটনা? ইভিপি সংক্রান্ত পোর্টাল শুরু থেকেই প্রযুক্তিগত কারণে হোঁচট খেয়েছে। সেই প্রযুক্তির ত্রুটির পরিণামে দেখা যাচ্ছে, ১০০ শতাংশের বেশি ভোটার কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। কারণ, কর্মসূচি চলাকালীন পোর্টালে হয়তো কোনও ভোটার তাঁর তথ্য ‘সাবমিট’ বা পেশ করছেন। কিন্তু পোর্টালে ত্রুটি থাকায় তথ্য গৃহীত হওয়ার সঙ্কেত বুঝতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ভোটার। ফলে তিনি আরও কয়েক বার ‘সাবমিট’ করেছেন। এমনকি কিছু ভোটারের সেই ‘সাবমিট’-এর সংখ্যা কুড়ি থেকে তিরিশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। তাই সংশ্লিষ্ট ভোটারের ২০ থেকে ৩০টি ফর্ম অনলাইনে তৈরি হয়েছে। এমনটা ঘটেছে বহু ক্ষেত্রেই। সঙ্গে রয়েছে বিয়োজন, সংযোজনের আবেদনও। সেই ফর্মও ইভিপি পর্বে যুক্ত হয়েছিল। তাই অনেকের একাধিক ফর্ম জমা পড়েছে। শেষে দেখা যাচ্ছে, ১০০ শতাংশের বেশি ভোটার যোগ দিয়েছেন ইভিপি-তে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ডেঙ্গিতে শিক্ষিকার মৃত্যু, আরজি করে দেহ দান মায়ের

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অন্য কয়েকটি রাজ্যেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হিসেবের তারতম্য নিয়ে কোনও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরকে ‘দোষারোপ’ করতে পারেনি কমিশন। তাই একশো শতাংশের বেশি বৃদ্ধি, তা দশমিকে হলেও বাদ দিচ্ছে কমিশন। ইভিপি-তে সব থেকে কম যোগদান কেরলে। সেখানে ৭৫ শতাংশ ভোটার নিজেদের তথ্য যাচাই করেছেন।

ত্রুটিবিহীন না-হলেও এই কর্মসূচি সফল বলেই কমিশন-কর্তাদের দাবি। তাঁদের মতে, ‘‘স্বাধীনতা-পরবর্তী পর্বে সব ভোটারকে (প্রায় ৯১ কোটি) নিয়ে এই ধরনের কর্মসূচি এই প্রথম। তাতে ভোটারেরা যে-ভাবে সাড়া দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। সব কিছুতেই প্রথম বার ত্রুটিবিচ্যুতি থাকে। যা মেরামত করেই পরবর্তী ক্ষেত্রে এগোতে হয়।’’

আগামী ১৬ ডিসেম্বর ভোটার তালিকায় সংযোজন, সংশোধন, বিয়োজন শুরু হবে। সেই পর্বকে কাজে লাগানোর জন্য আবেদন করছেন কমিশন-কর্তারা। এক কর্তা বলেন, ‘‘ইভিপি-তে যাঁরা সংশোধন করে উঠতে পারেননি, তাঁদের চিন্তার কিছু নেই। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুযারি পর্যন্ত ভোটার তালিকায় সংযোজন, সংশোধন, বিয়োজন চলবে। ওই এক মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিষয়ে আবেদন করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন