ফুলের মতো শিশুর আচরণও অনেক সময় নৃশংস ঠেকে। কেউ কেউ ভাই-বোন, বন্ধুবান্ধবকে নিষ্ঠুর ভাবে মারধর করে। কেউ আবার বাড়ির পোষ্য কুকুরকে মেরে রক্তাক্ত করে দেয়। অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছ মেরে ফেলতে, এমনকী পুতুলের হাত-পা ভেঙে ফেলতেও দেখা যায় বাচ্চাদের।
মনোবিদ জয়রঞ্জন রামের মতে, মূলত দু’ধরনের শিশুদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যায়। ১) যারা অতিরিক্ত চঞ্চল, অস্থিরমতি সেই সব শিশু এবং ২) যে সব শিশু নিজেরা মারধর খায়, তারা। সদা চঞ্চল শিশুরা ভেবেচিন্তে কাজ করে না। ফলে নিষ্ঠুর কোনও দৃশ্য দেখে তার অনুকরণ করতে গিয়ে অঘটন ঘটিয়ে ফেলে। আর যে সব শিশু বাড়িতে বা স্কুলে মার খায়, তারা মনের ভিতরে জমে থাকা রাগ থেকে এমন আচরণ করে থাকে।
পরিজনদের রাগ প্রকাশের ভঙ্গি দেখে শিশুরা শেখে। ফলে, ওদের সামনে মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরি।
বাড়ির পরিবেশ সুস্থ হওয়া প্রয়োজন। বাবা-মায়ের মধ্যে নিত্য অশান্তি, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক শিশুকে আক্রমণাত্মক করে তোলে।
ছোট পরিবারে অনেক শিশুই এখন দীর্ঘ সময় টিভি বা কম্পিউটারে ডুবে থাকে। সেখানে নৃশংস খুনের দৃশ্য, এমনকী কার্টুনে দেখানো মারামারিও শিশুমনে প্রভাব ফেলে। এ সব থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন।
সন্তান স্কুলে নিগৃহীত হচ্ছে কিনা, খোঁজ নিন। সেই জনিত রাগ থেকেও ওর আচরণ নৃশংস হতে পারে।
খুব চাপা স্বভাবের শিশু যদি হঠাৎ নৃশংস আচরণ করে, তা হলে বিশেষ গুরুত্ব দিন। কেন এই পরিবর্তন সেটা বুঝুন।
যখন দেখছেন সন্তান মাঝেমধ্যেই নৃশংস আচরণ করছে, তখন ওর সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন। ওর রাগের কারণটা বোঝার চেষ্টা করুন।
সন্তান বিশেষ কিছু পাওয়ার জন্য এমন আচরণ করছে কিনা দেখুন। সেটা হলে ওকে বুঝিয়ে দিন, ভাল আচরণ করলে তবেই সেই জিনিসটা পাওয়া যাবে।
কাউকে আঘাত করলে যে তার যন্ত্রণা হয়, এটা শিশুকে বোঝানো দরকার। ওকে বলুন, ‘তোমাকে মারলে তোমার যেমন ব্যথা লাগে, তুমি কাউকে মারলে তারও কষ্ট হয়’।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে ধৈর্য খুব জরুরি। একান্তই সামলাতে না পারলে মনোবিদের পরামর্শ নিন।