বনগাঁর দুষ্কৃতী অসীম ভট্টাচার্য। -নিজস্ব চিত্র।
জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরনোর ৬ দিন পরেই খুন হল বনগাঁর ত্রাস অসীম ভট্টাচার্য। শনিবার সকালে বনগাঁর ঠাকুরপল্লি এলাকা থেকে অসীমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মাথার সামনে ও পিছনের দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন মিলেছে। গত ২০ বছর ধরে বনগাঁ দাপিয়ে বেড়ানো অসীম গোটা এলাকায় ‘সুপারি কিলার’ বলে পরিচিত ছিল। আততায়ীরা এখনও গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৬ দিন আগে জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়েই এলাকায় ফের তাণ্ডব শুরু করে অসীম।
পুলিশ জানাচ্ছে, শুক্রবার রাতে এলাকার এক মহিলার বাড়িতে বন্দুক নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় চড়াও হয় অসীম। মহিলার ছেলের খোঁজখবর পাওয়ার জন্য বেধরক মারধর করে ওই মহিলাকে। অসীমের সন্দেহ হয়েছিল, তার সঙ্গে অভিনয় করে তার কাছ থেকে খবরাখবর নিয়ে ওই মহিলা তা তার ছেলেকে জানিয়ে দিচ্ছেন। ফলে, অসীমের গতিবিধি সম্পর্কে আগেভাগেই সচেতন হয়ে পড়ছে দুষ্কৃতীদের মধ্যে তার বিরোধী গোষ্ঠী। শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ ঠাকুরপল্লি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পায় একটি পুকুরের পাশে একটি রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ দেহটি শনাক্ত করে ময়নাতদন্তের জন্য সেটি পাঠায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। বনগাঁ শহরের চাঁপাবেড়িয়ায় বাড়ি অসীমের।
বনগাঁ ও অশোকনগর থানায় অসীমের বিরুদ্ধে মোট ৪টি খুনের অভিযোগ ছিল। অভিযোগ ছিল ঘোলা থানাতেও। এ ছাড়াও তোলাবাজি, বন্দুক দেখিয়ে হুমকি, মাদক পাচারের আরও বেশ কয়েকটি মামলা ছিল বনগাঁ, অশোকনগর ও ঘোলা থানায়। এর আগে অসীমকে গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধও করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন- ইন্টারনেট খুলে পার্লারে বসছেন কর্মীরা
আরও পড়ুন- জুলুম বন্ধের নির্দেশ বনগাঁতেও
বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, পুরনো শত্রুতার জেরেই অসীম খুন হয়েছে। কারা তাকে খুন করেছে, আমরা তা শনাক্ত করতে পেরেছি। তবে তাদের এখনও ধরা যায়নি। জোর তল্লাশি চলছে।’’
অসীমের স্ত্রী ডলি ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় আমার মাথায় হাত দিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিল রাতে বাড়ি ফিরবে। ঝামেলায় জড়াবে না। রাতে ও বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পাই ওর দেহ পড়ে রয়েছে পুকুরঘাটে।’’