Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইন্টারনেট খুলে পার্লারে বসছেন কর্মীরা

চুলের ছাঁটে গ্রামে-গঞ্জে মেসি-নেমাররা চোখে পড়ছে আকছার। এমনকী, ফুটবলারদের দেখে ট্যাটু করারও হিড়িক পড়েছে।

কায়দা: বনগাঁর একটি সেলুনে। নিজস্ব চিত্র

কায়দা: বনগাঁর একটি সেলুনে। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০১:৪২
Share: Save:

পাড়ার মোড়ে মোড়ে ঝুলে পড়েছে নীল-সাদা ডোরাকাটা পতাকা। চায়ের দোকানে, লোকাল ট্রেনে হা-হুতাশ চলছে। মেসি-বিদায়ের স্মৃতিটুকু অবশ্য এখনও ঘুরছে বহু তরুণের মাথায়।

চুলের ছাঁটে গ্রামে-গঞ্জে মেসি-নেমাররা চোখে পড়ছে আকছার। এমনকী, ফুটবলারদের দেখে ট্যাটু করারও হিড়িক পড়েছে।

বনগাঁর এক সেলুনে মামার সঙ্গে চুল কাটাতে এসেছিল বছর পনেরোর কৃষ্ণ মল্লিক। বায়না ধরল, স্পেনের ফুটবলার কোস্তারের মতো স্টাইল চাই মাথায়। মামার ধমকে কাজ হল না। এ দিকে, ওই চুলের ছাঁট জানা নেই সেলুনে কারও। শেষে মামার মোবাইল থেকেই ছবি বের করা হল কোস্তারের। চিরুনি-কাঁচি নিয়ে কৃষ্ণকে কোস্তার তৈরির চেষ্টা শুরু হল।

শুভেন্দু বিশ্বাস নামে সুটিয়ার এক বাসিন্দা সেলুনে এসে মোবাইলে ব্রাজিল তারকা নেমারের ছবি দেখালেন। বললেন, ‘‘এমন চুলই চাই।’’ বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই অবশ্য এই ছাঁটে হাত পাকিয়েছেন সেলুনের কর্মীরা। শুভেন্দুর চুলের বাহার খানিকক্ষণের মধ্যেই ভোল বদলে বিলকুল নেমার।

রাশিয়ায় বিশ্বকাপ শুরু হতেই সেলুন-পার্লারগুলিতে ফুটবলারদের স্টাইলে চুল কাটার ধুম পড়েছে। কেউ আসছেন ফুটবলারদের মতো চুল কাটতে, কেউ মেসি-নেমারদের মতো ট্যাটুও বানাচ্ছেন। প্রিয় ফুটবল তারকাদের জন্য গলা ফাটানোর পাশাপাশি চলছে জার্সি কেনা। সেই জার্সি পরেই ঘুরতেও দেখা যাচ্ছে বনগাঁর নেমার-মেসিদের।

পার্লার মালিকেরা জানালেন, সাধারণ চুল কাটতে নেওয়া হয় ১৫০ টাকা। কিন্তু ফুটবলারদের মতো কাটিং করতে নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা। কেউ টাকার অঙ্ক শুনে পিছুপা হচ্ছেন না, অভিজ্ঞতা পার্লার-সেলুন মালিকদের। মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী নামে এক পার্লার মালিক জানালেন, চুলের ছাঁটে মেসি ও নেমারের কদর বেশি। কেউ আবার পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মতোও চুল কাটছেন। তিনি জানান, এখন যা পরিস্থিতি হেয়ার আর্টিস্টদের ইন্টারনেটে ছবি দেখে চুলের কাট তড়িঘড়ি শিখে নিতে হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন অলক প্রামাণিক। চুলে কায়দার ছাঁট তো করে ফেলেছেন হুজুগের মাথা। বললেন, ‘‘এই চুলের কাট অফিসে চলবে না। তাই টুপি পরে অফিস যাচ্ছি।’’ অফিস থেকে বেরোলেই টুপির তলার দেখনদার স্টাইল প্রকাশ্যে। বিশ্বকাপের ফাইনালের দিন অফিস থেকে আগাম ছুটি নিয়ে রেখেছেন বলে জানালেন অলক।

বাড়ির মেয়েদেরও এখন ফুটবলের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে আগের থেকে অনেক বেশি। আটা মাখা হাতে, শাড়িতে হলুদ লাগা হাত মুছতে মুছতে তাঁরাও হেঁশেল থেকে বেরিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরে যাচ্ছেন টিভির সামনে থেকে। চেঁচাচ্ছেন ‘গোওওওল’ বলে।

হাব়ড়ার অমৃতা বিশ্বাস বললেন, ‘‘ফুটবলের সময়ে সিরিয়াল দেখার প্রশ্নই ওঠে না।’’ শর্মিষ্ঠা নন্দী নামে এক বিবাহিতা তরুণীর কথায়, ‘‘বাড়ির সকলে ব্রাজিলের সমর্থক। খেলা থাকলে বাড়ির সক্কলে রাত জাগছে। আমিও বসে পড়ছি খেলা দেখতে। বেশ লাগছে এই উন্মাদনাটা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangaon Salon বনগাঁ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE