Durga Puja 2020

কুমারী মায়ের করোনা পরীক্ষার পরেই পুজো, বেলুড় মঠে মণ্ডপ ফিরছে পশ্চিমের বারান্দায়

বেলুড় মঠের পুজোর মূল আকর্ষণ অষ্টমীতে কুমারী পুজো। তা চাক্ষুষ করতে ফি বছর উপচে পড়ে ভিড়।

Advertisement

পিনাকপাণি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৩
Share:

প্রতি বছর যে ভাবে সন্ন্যাসীরা কুমারী মাকে কোলে করে মণ্ডপে নিয়ে আসেন, তা-ও এ বার হবে না।—ফাইল চিত্র।

নজিরবিহীন ভাবে এবার বেলুড়মঠে কুমারী পুজোর জন্য মনোনীত শিশুকন্যার করোনা পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা হবে তার পরিবারের সব সদস্যেরও। সেইসব রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই মহাষ্টমীর দিন পূজিত হবেন ‘কুমারী মা’। যাঁরা পুজো করবেন, সেই সন্ন্যাসীদেরও করোনা পরীক্ষা হবে। সেই পুজো ভক্তেরা দেখতে পাবেন লাইভ স্ট্রিমিংয়ে।

Advertisement

করোনা পরিস্থিতির জন্য পুজোর সবদিনই মঠে প্রবেশ বন্ধ। তাই পুজো দেখার লাইভ স্ট্রিমিংয়ের বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ। বোধন থেকে বিসর্জন— সবই লাইভ স্ট্রিমিং হবে।

বেলুড় মঠের পুজোর মূল আকর্ষণ অষ্টমীতে কুমারী পুজো। তা চাক্ষুষ করতে ফি বছর উপচে পড়ে ভিড়। ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের জমায়েত হয় অষ্টমী তিথিতে। কিন্তু এবার পুজোর কাজে নিযুক্ত সন্ন্যাসীরা ছাড়া কেউ থাকবেন না। কুমারী পুজোও বড় মণ্ডপ বেঁধে হবে না। বেলুড় মঠের তরফে স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দ মহারাজ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যাবতীয় সরকারি নির্দেশ মেনেই আয়োজন হবে অনুষ্ঠান। তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, "মঠের পরম্পরা ও ধর্মীয় আচার মেনেই হবে পুজো। কিন্তু মেনে চলা হবে সরকারি নির্দেশিকাও। তাই এ বারে নিয়মে কিছু বদল থাকছে। প্রথমত, যিনি কুমারী মা হবেন তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। সকলের ‌রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেই শুরু হবে পুজোর আয়োজন। বাড়ির লোকেরাই কুমারী মাকে দেবী রূপে সাজিয়ে নিয়ে আসবেন। আসনে বসাবেন এবং পুজো শেষে বাড়ি নিয়ে যাবেন। পুজোয় যে সকল সন্ন্যাসী নিযুক্ত থাকবেন তাঁদের সকলেরও হবে করোনা পরীক্ষা।"

Advertisement

আরও পড়ুন: বন্ধ প্রবেশ, বেলুড় মঠের পুজো দেখা যাবে অনলাইনে

প্রতি বছর যে ভাবে সন্ন্যাসীরা কুমারী মাকে কোলে করে মণ্ডপে নিয়ে আসেন, তা এবার হবে না। পাশাপাশিই, বদলে যাচ্ছে কুমারী পুজোর স্থানও। একদা অষ্টমীর কুমারী পুজো হত মন্দিরের পশ্চিম দিকের বারান্দায়। ভক্ত সমাগম বাড়তে থাকায় ২০০১ সালে পুজোর জায়গা বদলে মঠের মাঠে বড় মণ্ডপ বাঁধা শুরু হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেটাই চলেছে। জ্ঞানব্রতানন্দ মহারাজ বলেন, "এবার পুরনো ঢঙে পুজো হবে। মূল মন্দিরে মায়ের মূর্তির সামনে পশ্চিমমুখী দরজার বাইরেই হবে কুমারী পুজো। ২০০১ সালের আগে এখানেই পুজো হত।"

আরও পড়ুন: রাজ্যকে চিঠি, বাংলায় লোকাল ট্রেন চালাতে রাজি কেন্দ্র

১৮৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০১ সাল থেকে শুরু করেন দুর্গাপুজো। তখন থেকেই কুমারী পুজোর প্রচলন। মঠের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ জানান, নির্দিষ্ট বয়সের মাপকাঠি ছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ দেখে বাছা হয় কুমারী। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট মহারাজ স্বয়ং কুমারী মনোনীত করেন। এ বছরেও সেই মনোনয়ন হয়ে গিয়েছে। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই সেই পরিচয় জানাতে চান না মঠ কর্তৃপক্ষ।

মঠের ইউটিউব চ্যানেল ‘belurmath.tv’-তে দেখা যাবে কুমারী পুজো। তার জন্য এখন থেকেই ‘রিমাইন্ডার’ দিয়ে রাখা যাবে। তেমনই বলছে বেলুড় মঠের ওয়েবসাইট (belurmath.org)। পুজো শুরু ভোর ৫টা ১৬ মিনিটে। কুমারী পুজো সকাল ৯টা থেকে।

লকডাউনের শুরু থেকেই বন্ধ বেলুড় মঠে সাধারণের প্রবেশ। আনলক পর্বে তা চালু হলেও করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ২ অগস্ট থেকে ফের ভক্তদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। তাই ১১৯ বছরের রীতি মেনে এবার পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া যাবে না। দেবীদর্শনও হবে অনলাইনে। প্রসাদও পাওয়া যাবে না। ভোগ বিতরণ হবে না। কেউ পুজো দিতে চাইলে সামগ্রী জমা দিতে হবে মঠের মূল গেটের বাইরে অস্থায়ী ক্যাম্পে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন