—ছবি পিটিআই।
রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আলোচনার সুযোগ না থাকায় শুক্রবার বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখাল বিরোধী কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সেই হইচইয়ের মধ্যেই ভাষণ পাঠ করলেন। সভাকক্ষে চলা ওই বিক্ষোভের সম্প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কার নির্দেশে সম্প্রচার বন্ধ হল, তা নিয়ে পরে তদন্তের দাবি তোলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী।
রাজ্যপাল এ দিন বিধানসভায় ঢোকেন বেলা ১টায়। মিনিট তিন-চার পরে লিখিত ভাষণ পড়তে শুরু করেন তিনি। ভাষণের গোড়ায় শোকজ্ঞাপনের অংশটুকু তাঁর পড়া হয়ে যেতেই ১টা ৯ মিনিট নাগাদ হইচই শুরু করে দেন কংগ্রেস এবং বাম বিধায়করা। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, কেন চলতি অধিবেশনে ওই ভাষণ নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই? গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ওয়েলে নেমে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। তার মধ্যেই রাজ্যপাল বক্তৃতা পড়া শেষ করেন। তার পরে প্রথামতো বিউগলে জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠতেই বিক্ষোভ থামায় কংগ্রেস এবং বাম। কিন্তু জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার পরে ‘ধনধান্যপুষ্পে ভরা’ যখন বিউগলে বেজে ওঠে, তখন ফের তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাজ্যপালের উদ্দেশে সুজনবাবু বলেন, ‘‘স্যার, আপনার ভাষণ নিয়ে এখানে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’’ রাজ্যপাল অবশ্য কোনও দিকে না তাকিয়েই সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। তাঁকে এগিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার সুযোগ না দিয়ে ফের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল।’’ সুজনবাবু বলেন, ‘‘গোটা ভাষণ চর্বিত চর্বণ, অসত্য, ভুলে ভরা। তা নিয়ে আলোচনাও করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলাম। তার সম্প্রচার বন্ধ করা হল। তদন্ত করে বিধানসভায় জানানো হোক, কার নির্দেশে ওই সম্প্রচার বন্ধ হল।’’
রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আলোচনার সুযোগ এই অধিবেশনে না থাকায় বিজেপি অবশ্য বিক্ষোভ দেখায়নি। দলের বিধায়ক তথা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পরে বলেন, ‘‘যাঁরা লড়াই করছেন, করুন। আমরা ব্যবস্থার সঙ্গে আছি। কোথাও অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করব।’’
এ দিনই বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, আগামী অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আলোচনা হবে। মান্নান স্পিকারের কাছে জানতে চান, কবে তাঁরা ওই বিষয়ে সংশোধনী দিতে পারবেন? স্পিকার বলেন, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সংশোধনী দেওয়া যাবে।