SSC Recruitment Case

চাকরিপ্রার্থীদের থেকে দফায় দফায় ৪০ লক্ষের বেশি টাকা নেন? ইডি-র দাবি নস্যাৎ করে অন্য যুক্তি দিলেন জীবনকৃষ্ণ

এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত ২৫ অগস্ট মুর্শিদাবাদের গ্রামের বাড়ি থেকে জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চাকরিপ্রার্থীর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। মিলেছে ব্যাঙ্ক লেনদেনের প্রমাণ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৫ ১৬:৩৩
Share:

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা আপাতত ইডি হেফাজতে। —ফাইল চিত্র।

চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে দফায় দফায় ৪০ লক্ষের বেশি টাকা নিয়েছেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এমনটাই দাবি করছে ইডি। যদিও বিধায়ক নিজে এই দাবি অস্বীকার করেছেন। ইডি সূত্রে খবর, তিনি টাকার প্রশ্নে অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। আদৌ এই টাকা চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন জীবনকৃষ্ণ।

Advertisement

এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত ২৫ অগস্ট মুর্শিদাবাদের কান্দির আন্দিতে গ্রামের বাড়ি থেকে জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে ইডি। এই সংক্রান্ত মামলায় এর আগে তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। আপাতত জীবনকৃষ্ণ ইডি হেফাজতে রয়েছেন। এসএসসি মামলার তদন্তে নেমে তৃণমূল বিধায়কের অনেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেনের হদিস পেয়েছে ইডি। শুধু জীবনকৃষ্ণ নন, তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টেও লেনদেন হয়েছে। এ বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য, নথি সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। অনেকের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে ৪০ লক্ষের বেশি টাকা অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন জীবনকৃষ্ণ। কারও কারও কাছ থেকে একাধিক দফায় টাকা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই চাকরি পাননি।

ইডির সূত্র বলছে, সঞ্জিত মণ্ডলের কাছ থেকে সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা, নবীন মণ্ডলের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা, রানা মণ্ডলের কাছ থেকে দু’দফায় মোট আট লক্ষ টাকা, অমিত বিশ্বাসের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা, আরিফ ইকবালের কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকা, প্রণয়চন্দ্র বিশ্বাসের কাছ থেকে তিন দফায় মোট ১২ লক্ষ টাকা জীবনকৃষ্ণ বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। এ ছা়ড়া, দীপক দাস নামের আরও এক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে দু’দফায় ১২ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। দীপক চাকরি পাননি। ২০২২ সালে তাঁকে পাঁচ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হয়। অভিযোগ, বাকি টাকা ফেরত চাইলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছিল ওই চাকরিপ্রার্থীকে।

Advertisement

এই চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেছে ইডি। অর্থ লেনদেনের নথিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তবে জীবনকৃষ্ণকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এগুলি জমি সংক্রান্ত লেনদেনের অর্থ। এর সঙ্গে চাকরির কোনও সম্পর্ক নেই। বিধায়কের এই যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় সংস্থা।

এর আগে সিবিআই যখন জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করেছিল, তিনি কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের দেখে দু’টি মোবাইল বাড়ির পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তিন দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে পুকুরের জল ছেঁচে তুলে সেই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছিল। কিছু দিন আগে ইডি যখন তাঁর বাড়িতে হানা দেয়, বিধায়ক পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। দৌড়োতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে কাদায় পড়ে যান তিনি। তাঁর মোবাইল ছিটকে পড়েছিল পরিত্যক্ত নর্দমায়। পরে জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসে ইডি। বীরভূমে তাঁর পিসি তথা তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চলেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। জীবনকৃষ্ণের পাশাপাশি তাঁর আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের কার্যকলাপ ইডির নজরে রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement