গত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাশের হারে রাজ্যে প্রথম স্থান পেয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। অথচ এ বার এই জেলাতেই গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার কমেছে।
আগামি ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা পর্ব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে
ইতিমধ্যেই পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির প্রধান সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে সমন্বয়
বৈঠক হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত বিদ্যালয়গুলির পরীক্ষাকক্ষের পরিকাঠামো, যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সুবিধা এবং নিরাপত্তার বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর ও প্রশাসন সূত্রেজানা গিয়েছে, গত বছর উত্তরবঙ্গের একটি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরুর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে নজরদারির ব্যবস্থা নিয়ে এ বার বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর দিনেও পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অভিভাবকদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার আগে থেকেই নিষিদ্ধ ছিল। এ বারও সেই নিষেধাজ্ঞা পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রে নিযুক্ত শিক্ষক ও ইনভিজিলেটরদের ক্ষেত্রেও বহাল করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে কেউই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রধান শিক্ষকের কাছে তাঁদের মোবাইল জমা রাখতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্যাকেট পরীক্ষা কেন্দ্রের অফিসে খোলা যাবে না। পরীক্ষার কক্ষে পরীক্ষার্থীদের সামনেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে। ১০টি করে প্রশ্নপত্র নিয়ে একটি প্যাকেট করা হয়েছে। তাই পরীক্ষাকক্ষে ১০ কিংবা তাঁর গুণিতক সংখ্যায় পরীক্ষার্থী বসার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে তাঁর প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকক্ষের মধ্যে প্যাকেটে ভরে ‘সিল’ করতে হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রগুলতে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আগাম পদক্ষেপ হিসেবে ‘স্পর্শকাতর’ পরীক্ষা কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সব পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। এই পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও, এসডিও, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ আধিকারিকরা পরিদর্শনে যাবেন। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ জানতে ও তাদের সাহায্য করতে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। পাশাপাশি পুলিশের তরফেও কন্ট্রোল রুম খোলার ব্যবস্থা হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের জেলায় কোনও
‘স্পর্শকাতর’ পরীক্ষা কেন্দ্র নেই। সকল পরীক্ষার্থী যাতে ভালভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’