নেশার টাকা না দেওয়ায় মেয়েকে পুড়িয়ে মারল বাবা!

মৃত সরস্বতী ক্ষেত্রপালের (১৯) মা ও দিদির অভিযোগ, মঙ্গলবার দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে তাঁদের সব ঘটনা জানান সরস্বতী। পরে তাঁর মা কল্পনা ক্ষেত্রপালের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার মেমারির কলেজ-মাঠপাড়ার বাসিন্দা শঙ্কর ক্ষেত্রপালকে ধরে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

সরস্বতী ক্ষেত্রপাল

দিন কয়েক আগে মদ্যপান করে ঝামেলায় জড়ানো বাবাকে কয়েকজন মারছে দেখে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ছোট মেয়ে। নেশার টাকা দিতে না চাওয়ায় সে মেয়েকেই পুড়িয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বাবা।

Advertisement

মৃত সরস্বতী ক্ষেত্রপালের (১৯) মা ও দিদির অভিযোগ, মঙ্গলবার দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে তাঁদের সব ঘটনা জানান সরস্বতী। পরে তাঁর মা কল্পনা ক্ষেত্রপালের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার মেমারির কলেজ-মাঠপাড়ার বাসিন্দা শঙ্কর ক্ষেত্রপালকে ধরে পুলিশ। দু’মাস পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সরস্বতীর। দুই দিদির বিয়ের পরে পরিচারিকার কাজ করে পড়াশোনা, সংসারের খরচ জোগাতেন সরস্বতী। কল্পনাদেবীও খেত-জমিতে, হিমঘরে কাজ করেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, স্ত্রী, মেয়ের পরিশ্রমের টাকা কেড়ে নিয়ে নেশায় ওড়াতেন শঙ্কর। মদ, গাঁজা, হেরোইন, আঠার গন্ধ শোঁকার নেশা ছিল তাঁর। এ নিয়ে ঝামেলাও হত রোজ। তার মধ্যেই বিয়ের জন্য কিছু টাকা জমিয়েছিলেন সরস্বতী। সোনার গয়নাও গড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় নেশা করার জন্য টাকা চান শঙ্কর। সরস্বতী দিতে না চাইলে ভাতের থালা ছুড়ে ফেলেন তিনি। মদের বোতল দিয়ে মেয়ের মাথায় আঘাত করেন। কাঁদতে কাঁদতে ঘরে গিয়ে কাঁথা চাপা দিয়ে শুয়ে পড়েন সরস্বতী। অভিযোগ, শঙ্কর ঘরে ঢুকে খাটের নীচে বোতলে রাখা কেরোসিন মেয়ের গায়ে ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

পড়শিরা জানান, ধোঁয়া দেখে তাঁরা গিয়ে দেখেন, শঙ্কর উঠোনে একটি গাছের নীচে বসে রয়েছেন। সরস্বতী গায়ে আগুন লাগা অবস্থায় দরজা খুলে ছুটছেন কলতলার দিকে। পড়শি মালা ক্ষেত্রপাল, পুষ্প বাগদের দাবি, ‘‘দেখি, শঙ্কর মেয়েটাকে লাথি মেরে ফেলে দিল। কোনও রকমে ওর মা, দিদিদের খবর পাঠাই।’’ দিদিরা প্রথমে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান সরস্বতীকে। মৃতার মেজদি পূর্ণিমা দে বলেন, ‘‘এক বার বোনের সমস্ত মার্কশিট পুড়িয়ে দিয়েছিল বাবা। এ বার মেয়েটাকেই শেষ করে দিল!’

Advertisement

আরও পড়ুন: হ্রদে আত্মহত্যা এডস রোগীর, ‘সংক্রমণের’ ভয়ে হ্রদের জলই পাল্টে দিলেন গ্রামবাসীরা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন