অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে আদালতে জানাল রাজ্য। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ঘুষ নেওয়ায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে অবশেষে কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য। তারকেশ্বর থানার ওই মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন আইনে এফআইআর রুজু করা হয়েছে। ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। বুধবার হাই কোর্টে এমনটাই জানাল রাজ্য। ওই মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে কেন দুর্নীতিদমন আইনের আওতায় তদন্ত হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে এ বার ওই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল রাজ্য।
হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। বুধবার রাজ্যের বক্তব্য শোনার পরে আদালতের মন্তব্য, “আরও আগে এমন পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। একজন অফিসার নিজেও ঘুষ চাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। সেখানে কর্তব্যে গাফিলতি দেখিয়ে শুধুমাত্র শো কজ় সঠিক পদক্ষেপ ছিল না।” আগামী বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
আদালত সূত্রের খবর, হুগলি জেলার তারকেশ্বরে বিল্টু হাজরা নামে এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে প্রতিবেশীর গন্ডগোল হয়। বিল্টু তারকেশ্বর থানায় অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে বিল্টুকেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। তিনি জানতে পারেন, এর পিছনে পুলিশের হাত রয়েছে। পরে থানার তদন্তকারী অফিসারের একটি অডিয়ো রেকর্ড প্রকাশ্যে আসে (আনন্দবাজার ডট কম যার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেখানে শোনা যাচ্ছে, তারকেশ্বর থানার মহিলা অফিসার মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার কথা জানাচ্ছেন।
ওই ঘটনায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ইঞ্জিনিয়ার। প্রথমে মামলাটি একক বেঞ্চে বিচারাধীন ছিল। পরে আসে ডিভিশন বেঞ্চে। গত শুক্রবারই এই মামলায় রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি বসাক প্রশ্ন করেছিলেন, “দুর্নীতিদমন আইনে কেন ওই অভিযোগের তদন্ত হবে না? অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে শো কজ় করা হলেও, সেই নথিতে ঘুষের কথা কেন উল্লেখ নেই?” এই ঘটনায় নতুন করে তদন্ত রিপোর্টও চেয়েছে রাজ্য।
বস্তুত, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে গত বুধবারই হাই কোর্টে একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। রাজ্যের বক্তব্য, ওই মহিলা পুলিশ অফিসার ঘুষ চোয়েছিলেন এ কথা সত্য। কিন্তু তিনি কারও কাছ থেকে টাকা নেননি। রাজ্য জানায়, তারকেশ্বর থানার ওই মহিলা পুলিশ অফিসারকে সতর্ক করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও আদালতে জানিয়েছিল রাজ্য। তবে গত বুধবারের শুনানিতে রিপোর্ট দেখে বিচারপতি বসাক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় তদন্ত? কেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না?” তাঁর মন্তব্য ছিল, “ওই অফিসারের এখনই চাকরি চলে যাওয়া উচিত। এমনটা হলে মানুষ পুলিশের উপর ভরসা রাখবে কী ভাবে?’’