উচ্চশিক্ষার পরিবেশ শোধরাতে বলে বিতর্কে রাজ্যপাল

ধনখড় এ দিন উপাচার্যদের স্বাধীন ভাবে কাজ করার উপরে জোর দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০২
Share:

ছবি: পিটিআই।

রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ক্ষোভ-অনুযোগ-অভিযোগের স্রোত যেন থামছেই না! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে গোলমালের সময় থেকেই তিনি রাজ্যের শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে সরব। সেই বিতর্ক উস্কে দিয়ে রাজ্যপাল শুক্রবার বর্ধমান সার্কিট হাউসে জানান, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের পরিবেশ শোধরানো প্রয়োজন। তাঁর এই উক্তির প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল আগে রাজভবনের পরিবেশ ঠিক করুন!’’

Advertisement

ধনখড় এ দিন উপাচার্যদের স্বাধীন ভাবে কাজ করার উপরে জোর দেন। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আচার্য হওয়ার সুবাদে আমার মনে হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যদের উপরে রাজ্য সরকার ও আচার্যের চাপ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠান চলে একটি আইনের ভিত্তিতে। সেখানে রাজ্যপালের কিছু অধিকার আছে। রাজ্য সরকারের অধিকার তার থেকে কম।’’ কে বড় ‘বস’, সেই চক্করে পড়ে ছাত্রছাত্রীদের লোকসান হোক— এটা তিনি চান না বলে জানান আচার্য। রাজ্যে ছাত্রভোট আড়াই বছর ধরে বন্ধ থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন রাজ্যপাল।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবেকানন্দ-মূর্তিতে অশালীন শব্দ লিখে যে-অবমাননা করা হয়েছে, সেই বিষয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করুন। এখানে কিছু কম ঘটনা আছে নাকি!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পুর চেয়ারম্যানদের আর্থিক ক্ষমতা কাড়ল পুর দফতর

শিক্ষামন্ত্রী জানান, উপাচার্যেরা এ রাজ্যে স্বাধীন। নিজেদের কর্তব্য ভালই জানেন তাঁরা। রাজ্যপালের ও-সব দেখার প্রয়োজন নেই। ছাত্রভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ছাত্র সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার মূলে ছিল পরপর নির্বাচন। পার্থবাবুর কটাক্ষ, ‘‘উনি রাজ্যপাল, নাকি পদ্মপাল— সেটা আগে ভাবুন। নিজের পদের সম্মান রক্ষা করে চলুন।’’

রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে রাজ্যপালের সম্যক ধারণা নেই বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘উনি কি জানেন, এ রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪০! আরও ১০টি হচ্ছে। ৫২টি নতুন কলেজ হয়েছে। ছ’হাজার নতুন শিক্ষক এসেছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্র-ভর্তির হার ২০ শতাংশেরও বেশি। অনলাইনে ভর্তি চলছে।’’ যিনি এ-সব জানেন না, তাঁর এই বিষয়ে কিছু বলার অধিকার জন্মায় কি, প্রশ্ন পার্থবাবুর। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রতিদিনই রাজ্যপাল কিছু না কিছু বলে চলেছেন। প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন মনে করিনি। কিন্তু এ দিন শিক্ষা বিষয়ে উনি অনেক কিছু বলেছেন। তাই মুখ খুললাম। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ওঁর অজ্ঞতা আমাকে অবাক করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন