গ্লোবাল চেম্বার অব কমার্সের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। ছবি: রণজিত্ নন্দী।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক এবং ছাত্রদের একসঙ্গে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানালেন আচার্য।
বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের সেনেট হলে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে শিক্ষকদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের ছাত্র সংগঠেনর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পাল্টা অভিয়োগ, বিক্ষোভে সরগরম হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকাশ ভবনে কুটা এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকও করেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু স্বশাসিত একটি সংস্থায় শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রথম থেকেই উঠে প্রশ্ন। ঘটনার পরেই কোনও মন্তব্য না করলেও শুক্রবার সুরঞ্জনবাবু দাবি করেন, অভিযুক্তদের শাস্তি না হলে তার প্রতিবাদে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। ঘটনার প্রায় তিন দিন পর অবশেষে মুখ খুললেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।
শনিবার পার্ক স্ট্রিটে গ্লোবাল চেম্বার অব কমার্সের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যে কোনও মূল্যে দ্রুত বিশ্ববিদ্যলয়ের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষকরা শিক্ষা দেবেন, ছাত্ররা তা গ্রহণ করবে, এটাই যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। সমস্যা সমাধানে শিক্ষক এবং ছাত্রদের একসঙ্গে বসে আলোচনা করা উচিত।” তবে উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে এ দিন কোনও মন্তব্য করত চাননি আচার্য। তাঁর কথায়, “উপাচার্য নিজের মতামত জানিয়েছেন।”
সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গণ্ডগোল হয়েছে তা তৃণমূলের পূর্বপরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেছে রাজ্য বিজেপি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে টিএমসিপি সমর্থক ছাত্র এবং বহিরাগতরা শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়েছিল বলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ শনিবার রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেন। এ দিন বিকেলে বিজেপি-র এক প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে অনুরোধ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে তিনি যেন হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে দিয়ে পুরো বিষয়টি তদন্ত করান। শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্বশাসিত সংস্থাকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন না বলেও বিজেপি অভিযোগ করেছে। এ ছাড়া, রাজ্যপালের কাছে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছে ওই প্রতিনিধিদল।