হাওড়া-বর্ধমান (কর্ড)

রাতের ট্রেনে মারধর-ছিনতাই, জিআরপি-র তৎপরতায় ধৃত পাঁচ

দশমীর রাতে লোকাল ট্রেনে উঠে যাত্রীদের মারধর করে ছিনতাই শুরু করেছিল জনা ছয়েক দুষ্কৃতী। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রেল পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ে গে‌ল পাঁচ জন। একজন পালালেও তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কামারকুণ্ডু শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:২২
Share:

দশমীর রাতে লোকাল ট্রেনে উঠে যাত্রীদের মারধর করে ছিনতাই শুরু করেছিল জনা ছয়েক দুষ্কৃতী। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রেল পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ে গে‌ল পাঁচ জন। একজন পালালেও তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেশনে ওই ঘটনা ঘটে। রেল পুলিশের এক অফিসার জা‌নান, যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

হাওড়া রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রী চত্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রীদের অভিযোগ পাওয়ার পরই রেল পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। আমিও ঘটনাস্থলে যাই। রাতেই তল্লাশি চালালে পাঁচ দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। লুঠ হওয়া টাকার কিছু এবং ভোজালি, ছোরা-সহ নানা অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। বাকি একজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিট নাগাদ আপ বর্ধমান লোকা‌ল হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। ট্রেনে ভিড় তেমন ছিল না। বর্ধমানে বাড়ি ফেরার জন্য ওই ট্রেনে চেপেছিলেন মেটিয়াবুরুজের দুই বস্ত্র ব্যবসায়ী। মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেশনের আগে অনেকেই নেমে যাওয়ায় ট্রেন ফাঁকা হয়ে যায়। যাত্রীদের অভিযোগ, মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেশনে ঢোকার মুখে ট্রেনের গতি শ্লথ হলে ছ’জন দুষ্কৃতী লাফিয়ে ট্রেনের একটি কামরায় উঠে পড়ে। তাদের হাতে ভোজালি-সহ নানা অস্ত্র ছিল। ট্রেনে উঠেই তারা যে গুটিকয়েক যাত্রী ছিলেন তাঁদের মারধর করতে শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন পুলিশকে জানান, দুষ্কৃতীরা হাতের আঙুলে আঙটির মতো জিনিস (পাঞ্চার) পরে ছিল। তা দিয়ে যাত্রীদের ঘুসি মারছিল তারা। মারের চোটে কয়েকজন গুরুতর জখম হন। যাত্রীদের কয়েক জনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, টাকাপয়সা কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ওই দুই বস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন অন্যযাত্রীরা। পাশের কামরাতেই ছিলেন জিআরপি-র কয়েক জন কর্মী। যাত্রীদের চিৎকার শুনে তাঁরা ওই কামরায় চলে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। এক জনকে সেখানেই ধরে ফেল‌েন পুলিশকর্মীরা। বাকিরা ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালায়। আহত দুই যাত্রীকে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কামারকুণ্ডু জিআরপি-র ওসি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেনের কাছে ধানখেত থেকে দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। পরে বেগমপুর থেকে আরও দু’জন গ্রেফতার হয়। ধৃতদের নাম নাসিরুদ্দিন পিয়াদা, সেখ মনিরুদ্দিন, সেখ বাদশা, সেখ ফিরোজ এবং সেখ রাকিব। সকলেরই বয়স ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। প্রথম তিন জনের বাড়ি চণ্ডীতলায়। ফিরোজ ডানকুনি এবং রাকিব সিঙ্গুরের বড়া এলাকার বাসিন্দা।

বুধবার ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন