বাঁ হাতের শিরা কাটা, গলায় ফাঁস, উধাও প্রেমিক, রহস্য মৃত্যু অভিনেত্রীর

মাঝবয়সি এক ব্যক্তির প্রেমে পড়ে ঘর ছেড়েছিলেন উঠতি নায়িকা। মা-বাবার বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন মিনিট দশেক দূরত্বে, এক অভিজাত আবাসনে। থাকতেন একাই। মঙ্গলবার দেখা করতে গিয়ে মা দেখলেন, ফ্ল্যাটের সিলিং থেকে ঝুলছে মেয়ের দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৩
Share:

বিতস্তা সাহা

মাঝবয়সি এক ব্যক্তির প্রেমে পড়ে ঘর ছেড়েছিলেন উঠতি নায়িকা। মা-বাবার বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন মিনিট দশেক দূরত্বে, এক অভিজাত আবাসনে। থাকতেন একাই। মঙ্গলবার দেখা করতে গিয়ে মা দেখলেন, ফ্ল্যাটের সিলিং থেকে ঝুলছে মেয়ের দেহ। টলিউডের ওই নতুন অভিনেত্রীর এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কুয়াশা ঘন হয়েছে এ দিন থেকেই তাঁর প্রণয়ীর খোঁজ না-মেলায়।

Advertisement

গরফা থানার পুলিশ জানায়, মৃত অভিনেত্রীর নাম বিতস্তা সাহা (২৮)। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয় ই এম বাইপাসের ধারে একটি অভিজাত আবাসনের একতলায় এক কামরার ফ্ল্যাট থেকে। বিতস্তার বাঁ হাতের শিরা কাটা ছিল। রক্তাক্ত ছিল দেহটি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন আর সংশয়ের খটকাও আছে। গলায় ফাঁসই যদি দেওয়া হবে, হাতের শিরা কাটা কেন? হাতের শিরাই যদি কাটা হল, ফাঁসে ঝোলার ঘটনাটা ঘটল কী ভাবে? আত্মহত্যার ঘটনা হয়ে থাকলে নায়িকা একা গলায় ফাঁস দিলেন এবং হাতের শিরা কাটলেন কী করে? জবাব খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

বাড়ি ছাড়লেও বিবাহবিচ্ছিন্না মায়ের কাছে যাতায়াত ছিল বিতস্তার। কিন্তু গত শনিবার থেকে মেয়ের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ আচমকাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মেয়ের কোনও খোঁজ না-পেয়ে এ দিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তাঁর ফ্ল্যাটে যান মা গীতাদেবী। প্রথমে কলিং বেল বাজান। ডাকাডাকি-হাঁকাহাঁকি করেন। তার পরে ধাক্কাধাক্কি সত্ত্বেও দরজা খোলেনি। তখন আবাসনের কেয়ারটেকারকে বিষয়টি জানান তিনি। তার পরে খবর দেওয়া হয় গরফা থানায়। পুলিশ এসে দরজা ভাঙে। দেখা যায়, গলায় ওড়নার ফাঁসে ঝুলছেন নায়িকা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন

ওই প্রেমিকই মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী, থানায় গেলেন বিতস্তার মা

গীতাদেবী জানান, গত শনিবার থেকে মেয়ে ফোন ধরেননি। তাই এ দিন তিনি গিয়েছিলেন একমাত্র মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে। ‘‘এক বিবাহিত ব্যক্তির প্রেমে পড়ে বাড়ি ছেড়েছিল মেয়ে। কিন্তু এ দিন থেকে ওই ব্যক্তির খোঁজ নেই। উনি গা-ঢাকা দিয়েছেন,’’ বলেন গীতাদেবী।

বিতস্তার আত্মীয়স্বজন জানান, ‘বাঞ্ছা এল ফিরে’ এবং ‘বাঘিনী’ নামে দু’টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিতস্তা। ধীরে ধীরে টলিউডে পায়ের তলার জমি শক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কী করে ওই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে বিতস্তার যোগাযোগ হয়েছিল, তা তারা জানে না বলেই দাবি পরিবারের। ওই অভিজাত আবাসনের কাছেই পি মজুমদার রোডে থাকেন বিতস্তার মা।

পুলিশের অনুমান, প্রেমঘটিত জটিলতার জেরেই বিতস্তা আত্মহত্যা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিভিন্ন পোস্ট খতিয়ে দেখে সেই ধারণা জোরালো হয়েছে তদন্তকারীদের। তাঁরা জানান, কয়েকটি পোস্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে, প্রণয়-দ্বন্দ্বের কারণে বিতস্তা অবসাদে ভুগছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পোস্টগুলির বেশ কয়েকটি বিশেষ এক জনের উদ্দেশেই লেখা বলে তদন্তকারীরা জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন