পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল কলকাতা হাই কোর্টে। — ফাইল চিত্র।
ভিন্রাজ্যে কাজে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরা! এমন অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানি থাকলে তা পিছিয়ে গেল। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, যে হেতু এই বিষয়ে মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, সেই কারণে শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মামলার শুনানি মুলতুবি রাখল কলকাতা হাই কোর্ট।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা শুরু হয়েছে। দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক মাস আগে থেকেই সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিক বলে অভিযোগ। অনেক সন্দেহভাজন বাংলাদেশিও ধরা পড়েছেন। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ অতিসক্রিয়। বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁদের আটক করা হচ্ছে।
বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করার বিষয় নিয়ে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। হাই কোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি চলছে। বিশেষত, ওড়িশা এবং দিল্লিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করার বিষয় নিয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে হাই কোর্ট প্রশ্ন তোলে, কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে? কিসের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে? কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কি? শুধু তা-ই নয়, এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ওড়িশার মুখ্যসচিবকে চিঠিও দিতে।
অন্য দিকে, বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করার বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের তরফে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। গত ১৪ অগস্ট শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলা এবং সেই ভাষায় থাকা নথির কারণে অনেককে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে আটক করা বন্ধ রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের ভিত্তিতে কোনও অন্তবর্তিকালীন নির্দেশ দিতে অস্বীকার করে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। তবে মামলার শুনানিতে কোনও আপত্তি জানায়নি সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলিকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।