—ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে চাকরি বাতিল হওয়া ৩২ হাজার শিক্ষককে অ্যাপটিটিউড টেস্টের জন্য পাঁচ নম্বর দেওয়া হোক। তাতে অনেকের চাকরি বাঁচবে। কলকাতা হাই কোর্টে বৃহস্পতিবার এই সওয়াল করেছেন মূল মামলাকারীদের আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষককে পাঁচ নম্বর করে দেওয়া হোক। তা হলে বঞ্চিতেরাও চাকরির সুযোগ পাবেন। না হলে সকলের অ্যাপটিটিউড টেস্টের নম্বর শূন্য করে দেওয়া হোক।
ওই পরীক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর যুক্তি, ওই পাঁচ নম্বর দিয়ে নতুন করে মেধাতালিকা তৈরি করা হোক। তা করলে অনেক কম সংখ্যক শিক্ষককে চাকরি হারাতে হবে। যদিও ওই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘তা কী ভাবে সম্ভব? যাঁরা প্রশিক্ষিত রয়েছেন, তাঁদের কী হবে?” উত্তরে মূল মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘প্রশিক্ষিত হওয়ার জন্য তাঁরা এমনিতেই ১৫ নম্বর বেশি পেয়ে থাকেন। ফলে তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না।’’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসের ১২ তারিখ ওই মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ৪২৫০০ জন শিক্ষকের মধ্যে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক। প্রাক্তন বিচারপতির রায় ছিল, চাকরি বাতিল হলেও ওই শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন। তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্যকে। সেখানে যোগ্য এবং উত্তীর্ণদের চাকরি বহাল থাকবে। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে।
তবে একই সঙ্গে ওই ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্ষদকে শুরু করতে হবে। হাই কোর্টের ওই দুই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং পর্ষদ। সেখানে আবেদন জানান চাকরিহারাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সিঙ্গল বেঞ্চ শুনানিতে সব পক্ষকে বলার সুযোগ দেয়নি। সব পক্ষের বক্তব্য শোনেনি আদালত। ওই বছর শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরে মামলা যায় বিচারপতি চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে।