তাপপ্রবাহের সতর্কতা পুরুলিয়া-সহ দক্ষিণবঙ্গে

আবহবিদ্যার পরিভাষায় গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হলে (এ ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি হতে হবে) সেটাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০২:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বহরমপুর দিয়ে বৃহস্পতিবারেই রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে তাপের প্রবাহ।

Advertisement

এর পরে দু’দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের আট জেলায় তাপপ্রবাহ বইতে পারে বলে এ দিন সতর্ক করে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তারা জানিয়েছে, আজ, শুক্রবার এবং কাল, শনিবার তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও অস্বস্তিকর গরম এবং অতি আর্দ্রতার জ্বালা সইতে হবে। মহানগরে এ দিনেও দহন ও অস্বস্তির ছিল চরমে।

আবহবিদ্যার পরিভাষায় গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হলে (এ ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি হতে হবে) সেটাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসেবে এ দিন বহরমপুরে তাপপ্রবাহ বয়েছে বলে হাওয়া অফিসের খবর। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.৪ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় ফণীর হানার পর থেকেই চড়চড়িয়ে গরম বাড়ছে দক্ষিণবঙ্গে। তীব্র উত্তাপের সঙ্গী হয়েছে মাত্রাছাড়া আর্দ্রতা। আলিপুর হাওয়া অফিসের আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, সাধারণ ভাবে এই সময়ে বঙ্গোপসাগরে একটি উচ্চচাপ বলয় (যেখানে বায়ুচাপ বেশি) থাকে। কিন্তু ফণীর ধাক্কায় বঙ্গোপসাগর থেকে সেই উচ্চচাপ বলয় উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকছে না। বায়ুপ্রবাহের ধরন বদলে যাওয়ায় বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে গরম হাওয়া ঢুকছে। তাই আরও বাড়ছে তাপমাত্রা।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। প্রচণ্ড আর্দ্রতার দরুন দুপুরে অস্বস্তিসূচক ছিল ৬৭.৪ (যা অস্বস্তির মারাত্মক মাত্রা)। হাওয়া অফিসের খবর, গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে সর্বত্রই এ দিন মাত্রাছাড়া গরম ছিল। বাঁকুড়ার তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। মেদিনীপুর, বর্ধমান, শ্রীনিকেতনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির ঘরে। আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, আজ, শুক্রবার এই তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

লাগামছাড়া গরমে সকাল থেকেই নাকাল হয়েছেন পথে বেরোনো মানুষজন। যদিও প্রকৃতির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই চলেছে ভোটের প্রচার। সন্ধ্যায় ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে অফিসফেরত জনতা ঘামতে ঘামতে বাড়ি ফিরেছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রেনে, বাসে, মেট্রোয় একই আলোচনা চলছে। শান্তিবারি নিয়ে বৈশাখী ঝড় আসবে কবে?

আশার খবর শোনাতে পারছে না হাওয়া অফিস। আবহবিদদের মতে, কলকাতায় ভয়ঙ্কর আর্দ্রতা মালুম হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কালবৈশাখীর মেঘ তৈরির জন্য পশ্চিমাঞ্চলের বাতাসে তথা গাঙ্গেয় বঙ্গের সর্বত্র পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প দরকার। উচ্চচাপ বলয় উধাও হয়ে যাওয়ায় সেই জলীয় বাষ্পের জোগানে ঘাটতি রয়েছে।

আপাতত ঝড়বৃষ্টির আশা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন