রাজ্যের নিজস্ব ডিএনএ পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। এই ঘাটতি পূরণে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবকে তা জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি ওই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জানান, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট সময়ে না পাওয়ায় রাজ্যের বহু ফৌজদারি মামলা ঝুলে রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের আরও দাবি, ওই পরীক্ষার জন্য রাজ্যের সেই পরিকাঠামো না থাকায় তাদের নির্ভর করতে হয় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির উপরে। কিন্তু সেই সংস্থাতেও ২০১৫ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট বকেয়া রয়েছে।
ওই পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য তোলার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে তা নিয়ে মাস খানেক আগে একটি রিপোর্ট তলব করেছিল ওই ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি ডিভিশন বেঞ্চে পিপি ডিজি-র দেওয়া একটি রিপোর্ট পেশ করেন। তাতে বলা হয়েছে, গত বছরের অগস্ট মাসে স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির জন্য একটি ডিএনএ অ্যানালাইজার কেনার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পিপি জানান, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবকে জানাতে হবে জেনেটিক অ্যানালাইজার কেনার প্রস্তাব পেয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। সেই রিপোর্ট সময়ে না পাওয়ায় তদন্তে ব্যাঘাত ঘটছে। তার ভিত্তিতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার সূত্রে হাইকোর্টের এই নির্দেশ।
আরও পড়ুন: পুরনো সরিয়ে চেহারা বদলে ফেলল সিপিএম
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, শুধু ধর্ষণ বা যৌন নিগ্রহের তদন্তে নয়, খুন বা অন্য কোনও ফৌজদারি মামলার তদন্তেও ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করতে হয়। ডিএনএ রিপোর্ট দ্রুত না পেলে তদন্তে যেমন ব্যাঘাত ঘটে, তেমনই সময়ে চার্জশিট পেশ না করার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্তরা অনেক সময়েই জামিন পান। তাতে তদন্তের আরও ক্ষতি হয়।
ওই কর্তা আরও জানান, কলকাতার গোরাচাঁদ রোডের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে এত দিন ধরে ডিএনএ পরীক্ষা হত। কিন্তু সেখানে বহু পদ ফাঁকা। পরীক্ষা করার জন্য প্রশিক্ষিত লোক সেখানে দিন দিন কমছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে চিঠি দিয়েছিলেন। গত ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সংস্থা বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, লোকের অভাবে ২০১৫ সাল থেকে ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা পড়ে রয়েছে।