বিপুল জোগানে মুঠোয় দাম, খুশি ইলিশপ্রেমীরা

দিঘাতেও মঙ্গলবার রেকর্ড পরিমাণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। দিঘা মৎস্যজীবী সংগঠনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দেড়শো টনের মতো ইলিশ উঠেছে। সংগঠন সূত্রেই জানা গেল, গত কয়েকদিন ধরেই দিঘায় ইলিশের উৎপাদন রোজই ১০০ টন ছাড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০২
Share:

ইলিশের দাম ঘোরা ফেরা করছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। শুনলে ইলিশ প্রিয় বাঙালি চমকে উঠলেও এটাই বাস্তব।

Advertisement

গত কয়েক দিন দিঘা, নামখানা, কাকদ্বীপ মৎস্যবন্দরে আসা ইলিশের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে পাইকারি বাজারে এই দামেই বিকোচ্ছে জলের রুপোলি শস্য। তার উপর মঙ্গলবার হলদিয়ায় হলদি নদীতে আসা ইলিশের পরিমাণ দাম প্রায় ২০০ তে নামিয়ে এনেছে। এদিন ১৫ কুইন্টালের মতো ইলিশ এখানকার আড়তে এসেছে বলে মৎস্যজীবীরা জানিয়ছেন। স্বাভাববিক ভাবেই ইলিশের জোগান বাড়ায় খুশি মৎস্যজীবীরা।

হলদি নদীর তীরে মেরিন ড্রাইভের এক আড়তদার জানান, এ বার সাইজে দেড় থেকে দু-কেজি ইলিশও মিলেছে। তবে দেড় কেজির বেশি ইলিশের দাম হাজার বারোশো। কিন্তু ৫০০ গ্রাম সাইজের দাম ৩০০ টাকা কেজি। ৩০০-৪০০ গ্রামের দাম নেমেছে ২০০ টাকায়। দামের এমন অধোগতি দেদার বিক্রি বাড়িয়েছে ইলিশের। এ দিন ঘাট থেকেই ইলিশ নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়াচ্ছিলেন জাহির আলি। হাসি মুখেই জানালেন, ‘‘দাম যে এতটা কমবে ভাবিনি। ৪-৫টা নিয়েই নিলাম।’’

Advertisement

দিঘাতেও মঙ্গলবার রেকর্ড পরিমাণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। দিঘা মৎস্যজীবী সংগঠনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দেড়শো টনের মতো ইলিশ উঠেছে। সংগঠন সূত্রেই জানা গেল, গত কয়েকদিন ধরেই দিঘায় ইলিশের উৎপাদন রোজই ১০০ টন ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার দেড়শ টন মাছ ধরা পড়ায় এক ধাক্কায় দামও অনেকটাই ক্রেতাদের নাগালে। দিঘা মোহনায় এদিন ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকা কিলোগ্রাম দরে। ৬০০ থেকে ১ কিলোগ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৫৫০ টাকায়। এক কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজনের ইলিশ বিকিয়েছে ৮০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে।

তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার। নামখানা, কাকদ্বীপ থেকে গত কয়েকদিনে রোজই বাজারে ইলিশের আমদানির পরিমাণ ৭০০ টনের মতো বলে বাজারের মৎস্যজীবীরা জানিয়ছেন। ইলিশের বিপুল জোগানে সোমবার শেষ রাত পর্যন্ত মাছ বেচাকেনা হয়েছে পাইকারি ২২৫ টাকা পাইকারি দরে। গড় সাইজ ছিল ৬০০ গ্রাম। তার চেয়ে সামান্য ছোট সাইজের মাছ বিকিয়েছে ১৬০ টাকাতেও। মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী আরও দু’দিন অর্থাৎ, বুধ ও বৃহস্পতিবারও এই পরিমাণ বজায় থাকবে। কারণ খবর মিলেছে, প্রচুর ইলিশ ধরে কয়েকশো ট্রলার কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন বন্দরে রওনা হয়েছেন।

তবে ইলিশের বিপুল পরিমাণে জোগান নগেন্দ্রবাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফোটালেও সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্যত্র। বাজারে ইলিশের লরির আনাগোনায় এলাকায় যানজট বেড়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ শহরবাসী। তাঁদের অভিযোগ, অপরিসর রাস্তায় মাছের লরির কারণে সাধারণ যান চালকেরা সমস্যায় পড়ছেন।

তবে ইলিশের এমন বিপুল উৎপাদনে মূলত অনুকূল আবহাওয়াকেই বাহবা দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। পাশাপাশি মাছের প্রজনন সময় (১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন) সমুদ্রে মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞাও অনেকটা সহায়ক হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। তাঁরা এমন দাবিও জানিয়েছেন, আগামী মরসুমে এই নিষেধাজ্ঞার সময়কাল আর একটু বাড়ালে আরও ভাল ফল পাওয়া যাবে।

তথ্য: আরিফ ইকবাল খান, শান্তশ্রী মজুমদার, শান্তনু বেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement