Anubrata Mondal

গার্গল করে কষ্ট একটু কমেছে কেষ্টর, কোভিড পরীক্ষা কি করালেন? থানায় কবে যাবেন? আবার মুখ খুললেন অনুব্রত

সোমবার কেষ্ট মণ্ডল ফোনে কথা বলতে বলতেই কাশছিলেন। তবে মঙ্গলবার তাঁর কণ্ঠস্বর বেশ ঝরঝরে শুনিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল, থানায় হাজিরা দিতে যাওয়ার দিনক্ষণ কি তিনি ঠিক করলেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৮:২৯
Share:

এখন কেমন আছেন অনুব্রত? —ফাইল চিত্র।

সোমবার বিকেলে প্রায় কথাই বলতে পারছিলেন না। গলাব্যথা, কাশি, জ্বর, নাক দিয়ে জল গড়াচ্ছে দাবি করে অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেষ্ট আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছিলেন, তেমন হলে মঙ্গলবার তিনি কোভিড পরীক্ষা করাবেন। মঙ্গলবার বিকালে সেই অনুব্রতই জানালেন, তিনি সোমবারের তুলনায় ‘ভাল’ আছেন।

Advertisement

অনুব্রতের কাছে আনন্দবাজার ডট কম-এর তরফে জানতে চাওয়া হয়, তিনি এখন কেমন আছেন। জবাবে আপাতত গৃহবন্দি তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘কালকের (সোমবারের) থেকে ভাল।’’ তাঁর গলা ব্যথা কমেছে? অনুব্রত বলেন, ‘‘হ্যাঁ, অনেকটাই কমেছে গার্গল করে।’’ কোভিড টেস্ট করালেন? অনুব্রতের জবাব, ‘‘না-না, করাইনি।’’

সোমবার ফোনে কথা বলতে বলতেই অনুব্রত কাশছিলেন। তবে মঙ্গলবার তাঁর কণ্ঠস্বর বেশ ঝরঝরে শুনিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক কৌতূহল ছিল, থানায় যাওয়ার দিনক্ষণ বা সময় কিছু ঠিক করলেন কিনা। অনুব্রতের জবাব, ‘‘নাহ্, এখনও ঠিক করিনি। করলে বলব।’’ পুলিশের আধিকারিককে অনুব্রতের ছাপার অযোগ্য ভাষায় টেলিফোনে হুমকি দেওয়া এবং তাঁর স্ত্রী এবং মাকেও ছাড় না দেওয়ার ‘অডিয়ো ক্লিপ’ ভাইরাল হতে শুরু করেছিল গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কিছু পর থেকে। শুক্রবার সকালে অনুব্রত আনন্দবাজার ডট কম-এই প্রথম দাবি করেছিলেন, ভাইরাল হওয়া অডিয়োর ওই কণ্ঠস্বর তাঁর নয়। যদিও পরে দলের চাপে ‘নিশঃর্তে ক্ষমাপ্রার্থনা’ করেন অনুব্রত। মেনে নেন, ওটি তাঁরই কণ্ঠ। শুক্রবার অনুব্রতকে নোটিস ধরিয়েছিল বীরভূম পুলিশ। তাতে বলা হয়েছিল, তাঁকে শনিবার বোলপুরের এসডিপিও দফতরে হাজিরা দিতে। তিনি যাননি। ফের শনিবার নোটিস দিয়ে বলা হয়, রবিবার হাজিরা দিতে। সে দিনও তিনি যাননি। বদলে দু’দিনই তাঁর আইনজীবীরা যান। প্রথম দিন পুলিশের হাতে তুলে দেন চিকিৎসকের ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’। যেখানে অনুব্রতকে পাঁচ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামের কথা লেখা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল।

Advertisement

অনুব্রতের অসুস্থতা এবং চিকিৎসকের সেই সংক্রান্ত ‘সার্টিফিকেট’ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, অনুব্রতের যে মেডিক্যাল রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, সেটি শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের। ওই মেডিক্যাল রিপোর্টে সই রয়েছে হিটলার চৌধুরী নামে এক চিকিৎসকের। ঘটনাচক্রে, রামপুরহাট ১-এর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের (বিএমওএইচ) নামও হিটলার চৌধুরী। বিতর্ক তা নিয়েই। প্রশ্ন উঠেছে, বিএমওএইচ পদে থাকা সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখছেন এবং মেডিক্যাল রিপোর্টও তৈরি করে দিচ্ছেন? তা হলে অনুব্রতের মেডিক্যাল রিপোর্ট কি ‘অবৈধ’?

অনুব্রতের মেডিক্যাল রিপোর্টে সই থাকা চিকিৎসক এবং রামপুরহাট ১-এর বিএমওএইচ একই ব্যক্তি কি না, সে বিষয়ে পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। বিএমওএইচ হিটলারের বাড়ি মল্লারপুরে। সূত্রের খবর, চিনের একটি কলেজ থেকে মেডিক্যাল পাশ করেছিলেন তিনি। সই নিয়ে বিতর্কের পর তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। যদিও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার মলয় পিট বলেন, ‘‘বাইরে আছি। কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ এই মলয় আবার ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ বলেই জেলায় পরিচিত। বীরভূমের মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শোভন দে-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় সই করেছেন আমি জানি না। আমার কাছে রিপোর্টও নেই। তবে সরকারি পদে থাকা কোনও ডাক্তারই এ ভাবে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখতে পারেন না। ভবিষ্যতে যদি আমার কাছে রিপোর্ট জমা পড়ে, আমি বিষয়টি দেখব।’’ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনের সময়সীমা শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। যেদিন আগের থেকে ‘সুস্থ’ অনুব্রত দাবি করলেন, থানায় যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলে তিনিই জানাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement