—প্রতীকী চিত্র।
শ্বাসরোধ করে খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল গঙ্গায়। হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় যুবক খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল পুলিশ। অন্য দিকে, মৃতের পরিবারের দাবি, সিবিআই তদন্ত হোক।
গত ১৮ অগস্ট থেকে নিখোঁজ হয়ে যান হুগলির মগরা থানার বাঁশবেড়িয়া ঝুলুনিয়া এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মণ চৌধুরী। ৩৬ বছর বয়সি ওই যুবকের খোঁজে তিন দিন নানা জায়গায় খোঁজখবর করে পরিবার। কিন্তু কোথাও সন্ধান মেলেনি। এর পর গত ২১ আগস্ট তারা নিখোঁজ ডায়েরি করে মগরা থানায়।
এলাকায় এলাকায় স্নিফার ডগ নিয়ে গিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে গঙ্গায় খোঁজ চলে। তার মধ্যেই শিবনাথ সাউ ওরফে শিবু নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, কিছু দিন আগে পরিবারের কয়েক জন এবং বন্ধুদের নিয়ে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। সেখান থেকে ফিরে আসার পর শিবু নামে ওই যুবক লক্ষ্মণকে বাড়ি থেকে স্থানীয় ক্লাবে ডেকে নিয়ে যান বলে দাবি পরিবারের। অবশেষে শিবু পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে, লক্ষ্মণকে খুন করেছেন তাঁরা। লক্ষ্মণের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। প্রমান লোপাট করতে দেহ টুকরো টুকরো করা হয়। তার পর ভাসিয়ে দেওয়া হয় গঙ্গায়।
ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে যুবককে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। মঙ্গলবার হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি (অপরাধ) অভিজিৎ সিন্হা মহাপাত্র বলেন, ‘‘নিখোঁজের একটা অভিযোগ দায়ের হয়েছিল মগরা থানায়। আমরা সেই মতো খোঁজ শুরু করি যুবকের। কয়েক জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাঁরা খুনের কথা স্বীকার করে নেন। সেই মতো আমরা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করি। খুনে ব্যবহৃত একটি ছুরি এবং গামছা উদ্ধার হয়েছে।’’ তবে এখনও পর্যন্ত লক্ষ্মণের দেহাংশ উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, আশপাশের সমস্ত থানা এবং রেল পুলিশকে জানানো হয়েছে। স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চলছে। সেই সঙ্গে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিজিৎ বলেন, ‘‘দেহ খুঁজে পাওয়ার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
মৃতের পরিবার পুলিশি তদন্তের উপর আস্থা নেই বলে জানিয়েছে। লক্ষ্মণের বোন সুমিত্রা চৌধুরীর কথায়, ‘‘১৫ দিন পর পুলিশ এসে বলছে, লক্ষ্মণকে খুন করে গুম করে দেওয়া হয়েছে! অনেক দিন আগেই তো শিবুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তা-হলে এতদিন পর কেন স্বীকার করছে! এর পিছনে কোনও প্রভাবশালীর হাত আছে। পুলিশ সেটা খুঁজে বের করুক অথবা সিআইডি-কে দিয়ে তদন্ত করাক।’’ মৃত যুবকের ভাই রাহুল চৌধুরী বলেন, ‘‘পুলিশ যে দাবি করছে, সেটা সঠিক নয়। সিবিআই তদন্ত হোক।’’