Pitch Curator Died

পিচ তৈরির সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু প্রস্তুতকারকের, ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ ক্লাবে

শনিবার ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ অর্পণের দেহ ক্লাবের সামনে নিয়ে আসা হয়। এর পরেই মৃতের পরিবার ও পাড়ার লোকজন ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৪৮
Share:

অর্পণ পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মানকুন্ডু স্পোর্টিং ক্লাবের পিচ প্রস্তুতকারকের (পিচ কিউরেটর)। মৃতের নাম অর্পণ পাত্র (২৬)। তিনি মানকুন্ডু মিলন নগরের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার সকালে পিচের কাজ করতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ওই যুবক। তাঁর অকাল মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্পোর্টিং ক্লাবে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে মৃতদেহ ক্লাবের সামনে রেখেই বিক্ষোভ চালালেন যুবকের পবিবার-পরিজনেরা।

Advertisement

মানকুন্ডু স্পোর্টিং ক্লাবের পিচ প্রস্তুতকারক হিসেবে কাজ করতেন অর্পণ। সিএবি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। গত ১০ বছর ধরে ক্লাবের মাঠ এবং পিচ দেখাশোনা করতেন অর্পণ। ওই ক্লাবের মাঠে জেলার ক্রিকেট-সহ সিএবি-র একাধিক খেলা হয়। গত দু’দিন বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে জল জমে থাকে। শনিবার সকালে পাম্প চালিয়ে জল বার করা এবং পিচ প্রস্তুত করার কাজ করছিলেন অর্পণ। জল বার করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। মাঠে সে সময় তাঁর সঙ্গে আরও এক জন কাজ করছিলেন। তিনি দেখতে পেয়ে ক্লাবে খবর দেন। অর্পণকে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শনিবার ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ অর্পণের দেহ ক্লাবের সামনে নিয়ে আসা হয়। এর পরেই মৃতের পরিবার ও পাড়ার লোকজন ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেন তাঁরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানকুন্ডু স্টেশন রোডে ভিড় জমে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ক্লাব কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়েনি বলে দাবি স্থানীয়দের। মৃত যুবকের প্রতিবেশী মিঠুন নন্দী বলেন, “অর্পণ মাঠের পিচ প্রস্তুত করা থেকে মাঠের বাইরেরও সমস্ত কাজ করত। ওর মাসিক বেতন ছিল ৬ হাজার টাকা। ওই বেতনে পিচ প্রস্তুতের কাজ ছাড়াও ওকে দিয়ে ইলেকট্রিকের কাজ করানো হত। ও ইলেকট্রিকের কাজ জানত না। কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়াই অর্পণকে দিয়ে এই কাজগুলিও করাত ক্লাব।” মিঠুন আরও বলেন, “কাটা তার জলে পড়ে থাকায় তা থেকে শর্টসার্কিট হয়ে গিয়েছে। একটা তরতাজা ছেলে চলে গেল। ক্লাব সম্পাদক ওকে দিয়ে সব কাজ করাতেন। অথচ মৃত্যুর পর ওর বাবা-মায়ের কী হবে সে কথা তিনি ভাবছেন না।” মিঠুন জানান, সকল পিচ প্রস্তুতকারকদের স্বাস্থ্য বিমা করিয়ে দেওয়া ক্লাব কর্তৃপক্ষদের দায়িত্ব। অথচ অর্পণের কোনও বিমাই ছিল না। এমনকি, পিচ প্রস্তুত করার সঠিক পরিকাঠামোও ক্লাবে নেই। কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি মিঠুনের।

Advertisement

ক্লাব সম্পাদক সঞ্জয় কর্মকার বলেন, “অর্পণ আমাদের মাঠের পিচ দেখাশোনা করত। আমরা ওর পরিবারের দাবি মেনে তাদের দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া, ওঁর বাবা (বিজন পাত্র) এবং মা (কাজল পাত্র)কে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। দু’জনের জন্য স্বাস্থ্য বিমাও করিয়ে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন