Youth

Death: বালককে বাঁচাতে গিয়ে ডুবে মৃত্যু যুবকের

ওই যুবকের নাম সায়ন বসু। লিলুয়ার ভট্টনগরের বাসিন্দা সায়ন বেলুড়ের লালবাবা কলেজে বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৩৪
Share:

সায়ন বসু।

গঙ্গার ঘাটে বসে সহপাঠীদের সঙ্গে গল্প করছিলেন বছর কুড়ির যুবক। আচমকাই তিনি দেখেন, জলে হাবুডুবু খাচ্ছে এক বালক। দেরি না করে তাকে বাঁচাতে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন ওই যুবক ও তাঁর এক বান্ধবী। কিন্তু জলের স্রোতে তিন জনই ভেসে যেতে থাকেন। শেষে ওই বালক ও তরুণীকে উদ্ধার করা গেলেও ডুবে মৃত্যু হল কলেজপড়ুয়া যুবকের। শুক্রবার বেলুড়ের ঘটনা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুবকের নাম সায়ন বসু। লিলুয়ার ভট্টনগরের বাসিন্দা সায়ন বেলুড়ের লালবাবা কলেজে বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ সহপাঠীদের সঙ্গে তিনি আসেন বারেন্দ্রপাড়া ঘাটে। সেখানে বসেই সকলে গল্প করছিলেন। তখন ওই এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে আসা বছর দশেকের এক বালক স্নানে নেমেছিল। আচমকাই তাকে তলিয়ে যেতে দেখেন সায়নেরা। দেরি করেননি ওই কলেজপড়ুয়া। সহপাঠীরা জানান, যে ভাবে হোক ছেলেটিকে বাঁচাতেই হবে, এই বলে পোশাক পরেই জলে নেমে পড়েন সায়ন। সঙ্গে নেমে পড়েন সহপাঠী অনীশা শী।

দু’জনে সাঁতরে ছেলেটির কাছে পৌঁছলেও জলের টান বেশি থাকায় কিছুতেই ঘাটের কাছে আসতে পারছিলেন না। উল্টে তিন জনই স্রোতে ভেসে যাচ্ছিলেন। তখন স্নান করতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন পাড়ুই। তিনি বলেন, ‘‘দেখি, তিন জন ভেসে যাচ্ছে। আর দেরি না করে আমি ঝাঁপ দিই। তরুণীর হাত ধরে টেনে সামনের দিকে এনে, যতটা সম্ভব সাঁতরানোর চেষ্টা করতে বলি। জলের টানে বাচ্চাটি ভেসে গিয়েছিল। একটি নৌকা তড়িঘড়ি এগিয়ে গিয়ে বাচ্চাটিকে তোলে।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সায়ন সাঁতার কাটছিলেন। কিন্তু তরুণী ও বালকটিকে তোলার পরে দেখা যায়, তিনি হাবুডুবু খাচ্ছেন। উদ্ধারের আগেই তিনি তলিয়ে যান।

Advertisement

খবর পেয়ে আসে বালি থানার পুলিশ। আসেন স্থানীয় ডুবুরি বীরেন কর্মকার ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে যেখানে সায়ন ডুবে গিয়েছিলেন, তার কয়েকশো মিটার দূরেই উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। খবর পেয়ে গঙ্গার ঘাটে আসেন স্থানীয় বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। এক জনকে বাঁচাতে গিয়ে আর একটি তরতাজা প্রাণ চলে গেল।’’

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, দু’জনেই সাঁতার জানতেন। এক জনকে বাঁচাতে গিয়ে আর এক জনের মৃত্যুতে আক্ষেপ যাচ্ছে না স্থানীয়দের। সালকিয়ার বাসিন্দা অনীশা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘‘দু’জন মিলে বাচ্চাটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সায়নকেই বাঁচাতে পারলাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন