স্ত্রীকে খুন করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন কোন্নগর পুরসভার প্রাক্তন কর্মী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
স্ত্রীকে খুন করে রাতভর অপেক্ষা। সকাল হতেই বাড়ির মূল দরজায় তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়েন স্বামী। কয়েক জন আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করেন। জানান, স্ত্রীকে মেরে ফেলেছেন। এখন থানায় যাচ্ছেন। এমনকি, দূরে থাকা আত্মীয়কে ফোন করেও খুনের খবর দেন। তার পর সোজা চলে যান থানায়। বুধবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য হুগলির কোন্নগর মাস্টারপাড়া এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম অশোক চট্টোপাধ্যায়। বয়স ৫৫ বছরের আশপাশে। স্ত্রী সবিতা চট্টোপাধ্যায় তাঁর চেয়ে বছর চারেকের বড়। ৫৯ বছর বয়সি স্ত্রীকে খুন করে তিনি শান্ত ভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। প্রথমে দিদির বাড়ি গিয়ে তাঁকে প্রণাম করেন। তার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেন অশোক।
কোন্নগর পুরসভার প্রাক্তন কর্মী অশোকের দিদি চন্দনা চট্টোপাধ্যায়, খুড়তুতো দাদা সহৃদ চট্টোপাধ্যায়, বৌদি লীনা চট্টোপাধ্যায়েরা জানান, ওই প্রৌঢ় দম্পতির নিত্যদিন ঝগড়া হত। মঙ্গলবারই দু’জনের চরম অশান্তি হয়েছে। তার পরেই ওই ঘটনা।
জানা যাচ্ছে, বর্তমানে কোনও কাজ করতেন না অশোক। ধারদেনাও রয়েছে। সে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। তবে খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
অশোক ও সবিতার প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার আওয়াজ কানে গিয়েছে তাঁদের। খুব চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছিল। কিন্তু তার পর যে এমনটা ঘটে যাবে, সেটা কেউই ভাবতে পারেননি।
বুধবার সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অশোক। প্রথমে যান পাশে দিদির বাড়িতে। দেখা হতেই দিদির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে জানান, স্ত্রীকে খুন করেছেন। এখন থানায় যাচ্ছেন। ত্রিবেণীতে থাকেন অশোকের আর এক দিদি। তাঁকে ফোন করে জানান স্ত্রীকে খুন করেছেন। ওই দিদি ভয় পেয়ে বাড়ির অন্যদের ফোন করেন। মুহূর্তের মধ্যে হইচই শুরু হয় এলাকায়। কোন্নগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ চক্রবর্তী যান অশোকদের বাড়িতে। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ গিয়ে দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে একটি নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অশোক জানিয়েছেন, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন তিনি।
গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। অশোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবারই তাঁকে আদালতে হাজির করানো হতে পারে পুলিশের একটি সূত্রে খবর।