TMC

তোলাবাজির রমরমা ফিরছে, চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

চুঁচুড়ায় তোলাবাজি, প্রমোটারিরাজ, পুকুর বোজানো, ঠিকাদারদের থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ নতুন নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ০৬:৩৫
Share:

ফাইল চিত্র।

ভোটে বিপুল জন-সমর্থন পেয়ে তৃতীয় বারের জন্য তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে সবে এক মাস। এরই মধ্যে হুগলিতে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল শাসক দলের একাংশের বিরুদ্ধে। তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার বাসিন্দাদের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রতিকার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর। চিঠির প্রতিলিপি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের কাছেও পৌঁছেছে।

Advertisement

চুঁচুড়ায় তোলাবাজি, প্রমোটারিরাজ, পুকুর বোজানো, ঠিকাদারদের থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ নতুন নয়। ওই সব কাজে এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতীদের আড়ালে শাসক দলের একাংশের মদতের অভিযোগও পুরনো। বছর দু’য়েক আগে এই শহরে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটে। দিনের আলোয় ভরা ব্যান্ডেল স্টেশনে এক তৃণমূল নেতা গুলিতে খুন হন। দুষ্কৃতীদের বাগে আনতে এর পরে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পদে হুমায়ুন কবীরকে বসানো হয়। প্রথমে রবীন্দ্রনগরে কুখ্যাত সমাজবিরোধী টোটন বিশ্বাসের ডেরায় গিয়ে পুলিশকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিলয়। দুষ্কৃতীরা পুলিশের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পরে অবশ্য টোটন-সহ বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরিস্থিতি পাল্টায়। সূত্রের খবর, এখন পরিস্থিতি ফের ভিন্ন খাতে বইছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো নাগরিকদের চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে।

ভোটের আগেই হুমায়ুন চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তিনি এখন রাজ্যের মন্ত্রী। গত কয়েক মাসে চন্দননগরে দু’বার কমিশনার বদল হয়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, বর্তমানে ওই সব এলাকায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কমেছে। ভোটের সময় দুষ্কৃতীদের উপরে শাসক দলের কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সেই রাশও এখন ঢিলে। উল্টে, শাসক দলের একাংশ তাদের ছাতার তলায় থাকা দুই পরিচিত তোলাবাজকে ফের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ। তারাই দুষ্কৃতীদের নিয়ন্ত্রণ করছে।

Advertisement

অভিযোগ, পুরনো বাড়ি ভাঙা, নতুন বাড়ি তৈরি— সব ক্ষেত্রেই তোলাবাজদের ‘খুশি’ করতে হয়। ঠিকাদার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, টোটো-অটো থেকে তোলা আদায়, পুকুর ভরাট, সিন্ডিকেট-রাজের আড়ালে শাসক দলের একাংশের দাপাদাপির অভিযোগও রয়েছে। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, এই অংশের দাপাদাপিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় গত লোকসভা নির্বাচনে রত্না দে নাগের মত শাসক দলের ভাল প্রার্থীকে হারতে হয়েছে।

অভিযোগ যে অমূলক নয়, তার উদারহণ জেলা জুড়েই রয়েছে। চুঁচুড়ায় জেলা পরিষদে ঠিকাদারদের অফিস রমরমিয়ে চলত। জেলার এক প্রভাবশালী বিধায়কের প্রত্যক্ষ প্রভাবে সিঙ্গুরে সেচ দফতরের একাংশ দখল করে ঠিকাদারদের অফিস চলত। মাস কয়েক আগে চুঁচুড়ার পিপুলপাতিতে পূর্ত দফতরের অফিসেই অন্য জেলা থেকে কাজে আসা এক ঠিকাদারকে মারধর এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয় দাবি মত তোলা না দেওয়ায়, এমন অভিযোগও ওঠে। লি‌খিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। সব ক্ষেত্রে অবশ্য ভুক্তভোগীরা থানা-পুলিশ করার সাহস পান না।

চিঠি প্রসঙ্গে শাসক দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘চিঠিতে অনেক সময় ভাল কিছু লেখা হয়, আবার মন্দ কিছু হলেও মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ আসে। পুরো বিষয়টিই দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। নির্দেশ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বেশি কিছু সংবাদমাধ্যমকে এখনই বলা যাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement