CCTV camera

বহু সিসিক্যামেরা বিকল মুম্বই রোডে, নিরাপত্তায় প্রশ্ন

রানিহাটি মোড় থেকে কোলাঘাট সেতুর আগে পর্যন্ত হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ওই জাতীয় সড়কের বিস্তার প্রায় ৩৬ কিলোমিটার।

Advertisement

সুব্রত জানা

বাগনান শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০১
Share:

লতাপাতা ও জঙ্গলে ঢেকেছে ওয়াচ টাওয়ার। নিজস্ব চিত্র

মুম্বই রোডে ঠিক কী ভাবে গাড়ির মধ্যে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা রিয়া কুমারী গুলিতে খুন হলেন, তার তদন্ত শুরু করেছে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। রিয়ার স্বামীর অভিযোগ, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় বাগনানের চন্দ্রপুরে তাঁর স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। ওই এলাকার অনেকেই দাবি করছেন, পুলিশ তদন্তে তৎপর হলেও ওই জাতীয় সড়কে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব রুখতে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এখনও প্রচুর ফাঁক রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

রানিহাটি মোড় থেকে কোলাঘাট সেতুর আগে পর্যন্ত হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ওই জাতীয় সড়কের বিস্তার প্রায় ৩৬ কিলোমিটার। একসময়ে জাতীয় সড়ক জুড়ে পুলিশের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছিল সিসিক্যামেরা। তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে সিভিক ভলান্টিয়াররা নজরদারি চালাতেন। কিন্তু সে সব এখন অতীত। টাওয়ারগুলি এখন লতাপাতায় ভর্তি। দু’বছর আগে আমপান ঝড়ে অধিকাংশ সিসিক্যামেরাই বিকল হয়ে যায়। তারপরে আর সারানো হয়নি। ফলে, দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশকে বেগ পেতে হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ মানেনি।

মুম্বই রোডে ছিনতাইয়ের অভিযোগও নতুন নয়। প্রতিদিনই চুরি-ছিনতাই হয় বলে অভিযোগ। বছর দেড়েকের মধ্যে এই জাতীয় সড়কে অন্তত ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরেই পাঁচলার কাছে রঘুদেবপুরে মুম্বই রোডের ধারে একটি পেট্রল পাম্পের কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা লুটেরঘটনা রয়েছে। মহিষরেখার কাছে একটি পাইপ কারখানায় সামনেথেকে এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনতাই হয়েছে। সব ঘটনাই পুলিশের খাতায় নথিভুক্ত হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘এই শীতের সময় কুয়াশার জন্য ওয়াচ টাওয়ারগুলি থেকে নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। কিন্তু রাস্তায় পুলিশ থাকে। নজরদারি চলে। বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি সিসিক্যামেরা সচল আছে। কোনও ঘটনা ঘটলে অভিযোগ পাওয়ামাত্র তদন্ত শুরু হয়। অনেক ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীদের ধরা হয়।’’

অনেকেই জানান, এক সময়ে মুম্বই রোডে পুলিশের নিয়মিত টহলদারি চলত। এখন টহলদারি থাকে না বললেই চলে। ঘটনা ঘটার পরে খবর গেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারপরে পুলিশ বিভিন্ন কারখানায় লাগানো সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা সফল হয় না।

তাই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে কেন ওয়াচ টাওয়ার বসানো হল এবং কেনই বা সিসিক্যামেরা লাগানো হল, সে প্রশ্ন যেমন উঠছে, তেমনই সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। চন্দ্রপুরের অনেকে মনে করছেন, ওই জায়গায় মুম্বই রোডে সিসিক্যামেরাগুলি সচল থাকলে পুলিশের পক্ষে ঝাড়খণ্ডের মহিলা খুনের কিনারা করা সহজ হত।

পুলিশের দাবি, খুনের খবর পাওয়ামাত্রই তদন্ত শুরু হয়েছে। আসল ঘটনা শীঘ্রই সামনে আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন