কব্জায়: বুধবার আদালতের পথে ধৃত দুই দুষ্কৃতী। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র দেখাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পরেও রাগে গর গর করছিল দুই ভাই। তাদের আফশোস যাকে মারতে এসেছিল তারা, গুলি খেয়েও সে বেঁচে গেল কীভাবে?
গত ১৫ মার্চ ডোমজুড়ের মাকড়দহে স্ত্রী-মেয়ের সামনেই তাপস গলুইকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ওই দুই দুষ্কৃতী। একটি গুলি তাপসের মাথা ফুটো করে পিছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাপস। ডোমজুড়ের আই সি সুবীর রায়ের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। মঙ্গলবার রাতে ডোমজুড়েরই নিবড়া থেকে অজয় সাউ ওরফে মায়া এবং তার ভাই বিজয় সাউ ওরফে দয়া নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, ১৬ রাউন্ড গুলি, একটি হেলমেট এবং যে মোটরবাইকে চড়ে তারা সেদিন এসেছিল সেটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। হামলার সময়ে দুজনেরই হাতেই রিভলভার ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। অন্য রিভলভাটির খোঁজ চলছে বলে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সুমিতকুমার জানিয়েছেন।
ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন?
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটা নাগাদ অজয় এবং বিজয় একটি মোটরবাইকে চড়ে মাকড়দহের মালিকপাড়ায় তাপসের বাড়িতে আসে। সে তখন বাড়িতে বসেছিল। তাপস, অজয়, বিজয় তিনজনের বিরুদ্ধেই অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে থানায়। তাপস গাঁজা বিক্রি করার জন্য ধরা পড়েছিল। মাসখানেক আগে সে জামিনে ছাড়া পায়। কোনও তোলাবাজির বখরা চাইতেই সেদিন তাপসের বাড়িতে এসেছিল দুই ভাই। কিন্তু তাপস টাকা দিতে অস্বীকার করায় অজয় এবং বিজয় দু’টি রিভলভার থেকে তাকে গুলি করে। একজনের রিভলভার থেকে গুলি বেরোলেও, অন্যটি থেকে গুলি বেরোয়নি। গুলির শব্দে বেরিয়ে এসে স্বামীকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে তাপসের স্ত্রী ও মেয়ে চিৎকার শুরু ককরে। তার মধ্যেই মোটরবাইক চড়ে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতী।
পুলিশ জানিয়েছে, তাপস, অজয় এবং বিজয় কেউই স্থানীয় বাসিন্দা নয়। তাপস এক সময় থাকত ডোমজুড়ের সলপে। বছর কয়েক আগে সে মালিকপাড়ায় বাড়ি করে থাকতে শুরু করে। অন্যদিকে অজয় এবং বিজয় হাওড়া শহরে আশু বোস লেনে থাকে। সমাজবিরোধী পাপাই-এর দলের হয়ে তারা কাজ করত। জামিনে ছাড়া পেয়ে তাপস নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। সেই কারণেই সে বাড়িতে সিসি টিভি বসায়। তাপসকে গুলি করার পরেই অজয় ও বিজয় মুম্বই চলে যায়। মঙ্গলবার রাতে ফিরে তারা নিবড়ায় ঘাঁটি গাড়ে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকেই তাদের ধরে। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ধরা পড়ার পরে দু’জনেই আফশোস করছিল তাপসকে মেরে না ফেলতে পারার জন্য।