রাতে ফোন করে ডাকা হয়েছিল আসাদুলকে, দাবি স্ত্রীর
TMc

বাগনানে তৃণমূল নেতাকে খুনের নালিশ

এদিন গাইঘাটা খালের উপরে পাকা সেতুর কাছে বাগনান-নারিট রোডের পাশে সকাল ৬টা নাগাদ তাঁর দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগনান শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০৬
Share:

অকুস্থল: পড়ে রয়েছে আসাদুলের মৃতদেহ। তদন্তে পুলিশ। ছবি: সুব্রত জানা

এক তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে বাগনানের কড়িয়া গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতের নাম আসাদুল রহমান (৫৫)। বাড়ি পাশেই খাজুট্টি গ্রামে।

Advertisement

এদিন গাইঘাটা খালের উপরে পাকা সেতুর কাছে বাগনান-নারিট রোডের পাশে সকাল ৬টা নাগাদ তাঁর দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। দেহের পাশে পড়েছিল তাঁর সাইকেল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। দেহটি দেখতে পাওয়ার খবর পেয়ে দলে দলে তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা এলাকায় ভিড় করেন। বিক্ষুব্ধরা পুলিশকে দেহটি তুলতে বাধা দেন। তাঁদের অভিযোগ, আসাদুলকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা।

পুলিশ ও তাঁর পারিবারিক সূত্রের খবর, এ দিন খুব ভোরে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। তাঁর স্ত্রী খোদেজা বিবি বলেন, ‘‘সোমবার রাতে একজন তাঁকে ফোন করে দেখা করতে বলেছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্যই তিনি মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।’’

Advertisement

আসাদুল তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে আছেন। একসময়ে তিনি বাইনান অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে মাস দুই আগে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আসাদুল দাশনগরে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। তাঁর মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি আসাদুল রোজ অফিসে যেতেন না বল‌ে তাঁর পারিবার সূত্রের খবর। খোদেজা বলেন, ‘‘এখন সপ্তাহে তিনদিন করে অফিসে যেতেন। বাকি সময়ে রাজনীতি করতেন।’’ খোদেজারও সন্দেহ, আসাদুলকে খুন করা হয়েছে।

দেহটি দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা দাবি করেন পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। বাগনান-নারিট রাস্তার গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূলের আমতা বিধানসভাকেন্দ্রের নেতারা। গ্রামীণ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারাও ঘটনাস্থলে আসেন। এলাকাটি বাগনান এবং আমতা থানার সীমান্ত এলাকায় হওয়ার ফলে দু’টি থানার পুলিশই আসে।

আমতা ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা আমতা বিধানসভাকেন্দ্রের তৃণমূল নেতা সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘এটা খুনের ঘটনা বলে আমাদের সন্দেহ। আমরা দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’ পুলিশ উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিলে বেলা ১০টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। দেহটিও উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।

এলাকাটি পড়ে কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের অধীনে। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করুক।’’ গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘মৃতের মাথায় আঘাত ছিল। সেটাই তাঁর মৃত্যুর কারণ প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টেই সব জানা যাবে। মৃতের পরিবারকে অভিযোগ জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা তদন্ত শুরু করেছি।’’ খোদেজা বলেন, ‘‘পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটি চলে গেল। সংসার কীভাবে চলবে বুঝতে পারছি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন