ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে ডেকে গুলি করে খুন ব্যান্ডেলে

শুক্রবার রাতে ব্যান্ডেল স্টেশন সংলগ্ন মসজিদপাড়া এলাকায় ব্রিজেশ সিংহ (৪৫) নামে ওই ব্যবসায়ীকে খুনের পরে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চম্পট দেয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কমিশনারেট গঠিত হওয়ার পরেও হুগলির শহরাঞ্চলে দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত কেন রোখা যাচ্ছে না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যান্ডেল শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০২:১০
Share:

নিহত: ব্রিজেশ সিংহ। নিজস্ব চিত্র

হুগলিতে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে লাগাম পরছে না কিছুতেই।

Advertisement

শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, কোন্নগরের পরে এ বার ব্যান্ডেল। বাড়ি থেকে ডেকে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করল এক ব্যবসায়ীকে।

শুক্রবার রাতে ব্যান্ডেল স্টেশন সংলগ্ন মসজিদপাড়া এলাকায় ব্রিজেশ সিংহ (৪৫) নামে ওই ব্যবসায়ীকে খুনের পরে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চম্পট দেয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কমিশনারেট গঠিত হওয়ার পরেও হুগলির শহরাঞ্চলে দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত কেন রোখা যাচ্ছে না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

কী কারণে ব্রিজেশ খুন হলেন, তা নিয়ে অন্ধকারে তাঁর পরিবারের লোকজন। তবে, পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরে ওই এলাকার দখল নিয়ে ব্রিজেশের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হামলা করে থাকতে পারে। কারণ, ব্রিজেশ এক সময়ে এলাকায় গাঁজা, হেরোইনের ব্যবসা করতেন। এ জন্য কয়েক বার তাঁকে হাজতবাসও করতে হয়। ইদানীং সে সব ছেড়ে দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করছিলেন। আর কাউকে ওই এলাকায় মাদক-ব্যবসা করতে দিচ্ছিলেন না। এর জেরেও তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযুষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাওয়া-দাওয়া সেরে শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন ব্রিজেশ। সেই সময় কয়েক জন বাড়ির বাইরে থেকে তাঁকে ডাকে। তিনি বেরিয়ে রাস্তায় যেতেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ করে পর পর কয়েকটি গুলি করে। ব্রিজেশের গালে, গলায় এবং বুকে তিনটি গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি লুটিয়ে পড়েন। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে আসেন। আসে পুলিশও। ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ব্রিজেশকে মৃত ঘোষণা করেন। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে, তা কারও নামে করা হয়নি।

নিহতের দাদা শঙ্কর বলেন, ‘‘কী কারণে কারা ভাইকে খুন করল বুঝতে পারছি না। তবে ভাই বলত, ওর উপরে কয়েক জনের আক্রোশ জন্মেছিল। সে জন্য রাতে ওকে বেশি বাইরে যেতে দিতাম না। শুক্রবার বেরিয়ে যেতে ভেবেছিলাম, পরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছে। পরে শুনি ওই ঘটনা।’’ নিহতের স্ত্রী মঞ্জু বলেন, ‘‘কিছুদিন ধরেই স্বামী খুব চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু আমাদের কাছে বলতে চাইতেন না। দোষীদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’

তবে, যে ভাবে হুগলির শহরাঞ্চলে একের পর এক দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যের খবর মিলছে, তাতে আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই মনে করছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলিতে পরিষ্কার, দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া। পুলিশ এখনই কঠোর পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। ‘চন্দননগর মর্নি ওয়াকার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সূর্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষকে নিরাপত্তা দিতে অবিলম্বে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’

একই দাবি আরও অনেকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন