অভিযুক্ত হরিণখোলা-১-এর প্রাক্তন পঞ্চায়েত

গ্রামোন্নয়নের টাকায় ফোন, বিতর্কে প্রধান

অভিযোগ, তৃণমূলের আগের বোর্ডের প্রাক্তন প্রধান, উপপ্রধান-সহ মোট ৭ সদস্যদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য দামি ফোন কেনা হয়েছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে। গ্রামোন্নয়নের জন্য সংগৃহীত এই তহবিল এ ভাবে খরচ করা যায় কি না জানতে চেয়ে আরামবাগের বিডিওর কাছে চিঠি দিয়েছেন নতুন বোর্ডের প্রধান আবদুল আজিজ খান ওরফে লাল্টু।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল তেমন জোরদার নয়। এলাকার একটি পানীয় জলের কল মেরামত করতে গেলেও সরকারি তহবিলের ভরসায় থাকতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে সেই তহবিলের টাকাও নয়ছয় করার অভিযোগ উঠল আরামবাগের হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।

Advertisement

অভিযোগ, তৃণমূলের আগের বোর্ডের প্রাক্তন প্রধান, উপপ্রধান-সহ মোট ৭ সদস্যদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য দামি ফোন কেনা হয়েছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে। গ্রামোন্নয়নের জন্য সংগৃহীত এই তহবিল এ ভাবে খরচ করা যায় কি না জানতে চেয়ে আরামবাগের বিডিওর কাছে চিঠি দিয়েছেন নতুন বোর্ডের প্রধান আবদুল আজিজ খান ওরফে লাল্টু।

বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য বলেন, “একটা অভিযোগ পেয়েছি। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

পুরো বিষয়টি নিেয় ক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কাজ ঘোরতর অন্যায়। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। পঞ্চায়েত দফতরের তরফে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সাল নাগাদ মোবাইগুলো নেন প্রধান গীতা ঘোড়ুই, উপপ্রধান মিঠু ঘোষ, শ্রীমন্ত কোলে, মাধবী হাজারি-সহ সাত জন পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ, গ্রামোন্নয়নের তহবিল থেকে এ ভাবে টাকা খরচ না করার জন্য তৎকালীন পঞ্চায়েত আধিকারিকরা আপত্তি করলেও তাঁরা মানেননি।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েতের সংগৃহীত নিজস্ব তহবিলের অর্থের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ এলাকার উন্নয়নে খরচ করতে হবে। বাকি ৫০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো উন্নয়ন হিসেবে বরাদ্দ থাকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পঞ্চায়েতের অফিস পরিচালনা খাতে ব্যয়ের পর উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ আর থাকে না বললেই চলে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে সরকারি মুখাপেক্ষী না হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে আর্থিক সাবলম্বী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বহুদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পঞ্চায়েতগুলি তাদের আয়ের উৎসগুলি কী ভাবে খুঁজে বের করে ব্যবহার করবে তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিবিরও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের তহবিল থেকে এ ভাবে ফোন কেনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

নতুন বোর্ডের প্রধান আবদুল আজিজ খানের অভিযোগ, ‘‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর নথি খতিয়ে দেখতে গিয়েই বিষয়টি নজরে আসে। বিডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

অভিযুক্ত প্রাক্তন প্রধান গীতা ঘোড়ুই বলেন, “তখন আমাদের কারও মোবাইল ছিল না। দ্রুত যোগাযোগ এবং গ্রামোন্নয়নের কাজ দ্রুত করতেই এই ফোন কেনা হয়েছিল। ব্লক প্রশাসন নির্দেশ দিলে ফোন ফেরত দেওয়া হবে।’’ কিন্তু এত দামি ফোন কেনা হল কেন?
কোনও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন