মেয়র-কমিশনার ‘দ্বন্দ্ব’ হাওড়ায়

প্রাক্তন পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে নবান্নের নির্দেশে সরাসরি বর্তমান পুর কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে পুরসভায় আগেই যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল। মেয়র বা মেয়র পারিষদদের অন্ধকারে রেখে সরাসরি কোনও পুর কমিশনারকে নিয়োগ করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেয়রই। বেঁকে বসেছিলেন মেয়র পারিষদেরাও।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

হাওড়া শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন পুর কমিশনারের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে নবান্নের সঙ্গে মতান্তর হয়েছিল আগেই। এ বার সেই পুর কমিশনারই কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে।

Advertisement

নতুন পুর কমিশনার রাজর্ষি মিত্র গত জুনে নিযুক্ত হওয়ার পরে মেয়র পুরসভার সচিব মানস দাসকে পাঁচ দিন বালি অফিসে বসতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ডেপুটি কমিশনার অরুণাভ দাসকে পদ্মপুকুর জল প্রকল্পে ও পাসোর্নেল অফিসার সোমনাথ দাসকে চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর করে বরো ১–এ বদলি করে দেন মেয়র। এই নির্দেশ জারির কিছু দিন পরেই পুর কমিশনার পাল্টা নির্দেশ দিয়ে অরুণাভবাবুকে পার্সোনেল দফতরের প্রধান করে পুরসভার সদর দফতরে ফিরিয়ে আনেন। তার পরেই ১৭ জুলাই নতুন আদেশ জারি করে পুর আইনের ২৫বি ধারা মতে পুর সচিবকেও সদর দফতরে বদলির নির্দেশ দেন। মেয়র ও পুর কমিশনারের এই নির্দেশ ও পাল্টা বদলির এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে পুরসভায় শোরগোল পড়ে। পুর আইনের রক্ষাকর্তা দুই পদাধিকারীর লড়াইয়ে উন্নয়নমূলক কাজকর্মে ভাটা পড়বে না তো, ওঠে প্রশ্ন।

প্রাক্তন পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে নবান্নের নির্দেশে সরাসরি বর্তমান পুর কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে পুরসভায় আগেই যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল। মেয়র বা মেয়র পারিষদদের অন্ধকারে রেখে সরাসরি কোনও পুর কমিশনারকে নিয়োগ করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেয়রই। বেঁকে বসেছিলেন মেয়র পারিষদেরাও। পরে অবশ্য দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বিষয়টি বাড়তে দেননি। ফলে রাজর্ষিবাবু নিয়ম মেনেই যোগ দিয়েছিলেন কাজে।

Advertisement

সূত্রের খবর, পুর কমিশনার হিসেবে যোগ দেওয়ার পরেই মেয়র ও মেয়র পারিষদদের সঙ্গে রাজর্ষিবাবুর মতান্তর শুরু হয়। মেয়র পারিষদদের অভিযোগ, বহু উন্নয়নমূলক ফাইল টাকার অভাব দেখিয়ে আটকে দিচ্ছেন কমিশনার। ফলে অনেক প্রকল্প মাঝপথে আটকে। আরও অভিযোগ, বিভিন্ন দফতরে ৯০০০ অস্থায়ী কর্মীকে বরখাস্ত করতে চাইছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মেয়র বলেন, ‘‘পুরসভায় সব কিছুই আইন মোতাবেক করতে হবে। আইনের বিরুদ্ধ কিছু হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। যে সব ঘটনা ঘটছে, তাতে মেয়র পারিষদেরা অসন্তুষ্ট। এ দিন মেয়র পরিষদের বৈঠকে আমাকেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও কোনও কথা বলতে নারাজ পুর কমিশনার রাজর্ষিবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই পরিস্থিতিতে কোনও কথা বলব না। আমি প্রেসের সঙ্গে কথা বলিও না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন