সংক্রমণ বাড়ায় এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। চন্দননগরের উর্দিবাজার এলাকায়। ছবি: তাপস ঘোষ
ফের করোনা উপসর্গের হদিস মিলল হুগলিতে।
মঙ্গলবার রাতে হুগলির চার শহরে (রিষড়া, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি ও চন্দননগর) সাত জনের শরীরে নোভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি ‘সিল’ করে প্রশাসন ‘কন্টেনমেন্ট জ়োনের’ আওতায় এনেছে।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, যে সব জায়গায় উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, সেখানে বাঁশের ব্যারিকেড করে রাস্তা আটকানো হয়েছে। সেখানকার স্থানীয় মানুষকে যাতে বাড়ি থেকে বেরোতে না হয়, সে জন্য ভ্যানে করে আনাজ, মাছ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব হবে না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রীরামপুর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এক ব্যক্তির শরীরে ওই ভাইরাসজনিত উপসর্গের প্রমাণ মিলেছে। সেখানে ইন্ডিয়া জুটমিল লাগোয়া কক্রেন রোড-সহ আশপাশের কয়েকটি রাস্তা বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর শিখা রায় জানান, বুধবার বিভিন্ন রাস্তা ঘেরার পাশাপাশি পুরসভার তরফে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড দ্রবণ ছিটিয়ে এলাকা স্যানিটাইজ় করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিক লাইনের কয়েকশো লোককে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা মানুষকে বলছি, তাঁরা যাতে কন্টেনমেন্টের নিয়ম যথাযথ ভাবে মেনে চলেন। কেউ যেন অযথা আতঙ্কিত না হন।’’
পুর-কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ জানান, এলাকাটি ঘিঞ্জি। জুটমিল আবাসনের ঘুপচি ঘরে শ্রমিক পরিবারের বাস। তাঁরা কমিউনিটি শৌচাগার এবং জল ব্যবহার করেন। যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বাসিন্দাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পাশের শহর রিষড়ার ২ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুই মহিলারও করোনার উপসর্গ মিলেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরপ্রধান বিজয় মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা কোনও ঝুঁকি নিচ্ছি না। ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু রাস্তা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। দমকল এবং পুরসভার তরফে জীবাণুনাশক ছেটানো হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সব কাজ করছি। এক শ্রেণির মানুষের বাইরে বেরনোর প্রবণতা কমছে না। ঠিক করেছি, প্রচার বাড়াব।’’
চাঁপদানি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের এক ব্যক্তিরও করোনা উপসর্গ মিলেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। ওই এলাকাও নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বাঁধা হয়েছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কয়েক দিন আগে চন্দননগর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তিন জন করোনায় আক্রান্ত হন। ওই এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী ১১ নম্বর ওয়ার্ড ‘সিল’ করে দেয় প্রশাসন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে থাকা বেশ কিছু মানুষকে সরকারি কোয়রান্টিন শিবিরে পাঠানো হয়। লালারস পরীক্ষা করা হলে তাঁদের মধ্যে তিন জনের করোনা উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তাঁরাও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)