Coronavirus

আতঙ্কে স্বেচ্ছাবন্দি পাড়া

মানুষকে সতর্ক করতে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রথমে অনেকেই গুরুত্ব দেননি। এখন তাঁরা গুরুত্ব িদচ্ছেন। সার্বিক ভাবে সব মানুষ সচেতন হবে বলেই আশা করছি। হুমায়ুন কবীর, চন্দননগরের পুলিশ কমিশনারনিত্যদিন সকালে যাঁরা থলে হাতে বাজারমুখো হচ্ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এ দিন স্বেচ্ছাবন্দি রইলেন। আতঙ্কিত এলাকাবাসী আর বাইরে বেরনোর ঝুঁকি নিলেন না।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৫:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি

ছবিটা বিলকুল বদলে গেল কয়েক ঘণ্টায়।

Advertisement

রবিবার রাতে জানা গিয়েছে, শেওড়াফুলির এক প্রৌঢ় করোনা আক্রান্ত। সোমবার সকালে তাঁর পাড়া তো বটেই, আশপাশের আশপাশের অলিগলিও ফাঁকা। নিত্যদিন সকালে যাঁরা থলে হাতে বাজারমুখো হচ্ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এ দিন স্বেচ্ছাবন্দি রইলেন। আতঙ্কিত এলাকাবাসী আর বাইরে বেরনোর ঝুঁকি নিলেন না।

রবিবার রাত থেকেই অবশ্য পুলিশ-প্রশাসন এবং বৈদ্যবাটী পুরসভার তরফে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। রাতেই পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেই ব্যাপারে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন। সোমবার সকাল থেকে পুরসভার তরফে করোনা নিয়ে সচেতনতার জন্য এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়। দমকলের ইঞ্জিন ওই পাড়ায় যায়। প্রৌঢ়ের বাড়িতে এবং আশপাশে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়।

Advertisement

পুরপ্রধা‌ন বলেন, ‘‘মানুষ যাতে অকারণে বাড়ি থেকে না বের হন, সে ব্যাপারে আমরা লাগাতার প্রচার করছি। এলাকা স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে।’’

ওই প্রৌঢ়ের জ্বর এসেছিল ১৫ মার্চ রাতে। পরের দিন উত্তরপাড়ার শিবতলায় একটি ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে যান তিনি। ওই ক্লিনিক বন্ধ রয়েছে। এ দিন সেখানে পুরসভার তরফে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড দ্রবণ দিয়ে রাস্তাঘাট ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। ব্লিচিং পাউডারও ছড়ানো হয়।

উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমরা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দফতরের আধিকারিকরা বিশেষ কোনও পরিমর্শ দিলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভাইরাস যাতে আর না ছড়ায় সেই জন্য যা যা ব্যবস্থা করা উচিত, সবই করা হচ্ছে।’’

প্রৌঢ়ের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ায় এলাকার অনেকেই উদ্বিগ্ন। এ দিন প্রৌঢ়ের প্রতিবেশী দেবব্রত পাল বলেন, ‘‘এমনিতেই আমরা বাড়ি থেকে পারতপক্ষে বেরোচ্ছিলাম না। শুধু আনাজ বা মাছ কিনতে বাজারে যাচ্ছিলাম। আজ দরজার বাইরে পা দিইনি। পাশের বাড়ির লোক আক্রান্ত হলে আতঙ্ক তো থাকবেই। ক’দিন আর বাজারে যাব না। মাছ না খেয়ে নিরামিষ দিয়েই চালাব।’’ আর এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘সামনের রাস্তা দিয়ে ওই পরিবারের লোকেরা অনেক বার হেঁটেছেন। তাই কয়েক দিন রাস্তাটাও এড়িয়ে চলতে হবে।’’

এ দিন গোটা শেওড়াফুলিতেই এ নিয়ে আলোচনা চলেছে। ফোনেও একই উদ্বেগের কথা চালাচালি হয়েছে। আক্রান্তের পড়শি হিমাদ্রি চৌধুরী চান, পুরসভার তরফে গোটা পাড়া জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হোক। তিনি বলেন, ‘‘ওই কাকু বাড়ি থেকে হয়তো বেরোননি। কিন্তু ওঁর বাড়ির লোকজন তো দোকান-বাজারে গিয়েছেন। পুরপ্রধানের কাছে অনুরোধ, পুরো এলাকাটাই স্যানিটাইজ় করা হোক।’’

পুলিশকর্মীদের অভিজ্ঞতা বলছে, লকডাউনের সময় ঘরে থাকার

কর্তব্য বোঝাতে বহু ক্ষেত্রেই প্রাণপাত করতে হচ্ছিল। পাড়ার মোড়ে উটকো আড্ডাও জমছিল। এ দিন অবশ্য

জোর করে কাউকে ঘরে ঢোকানোর দরকার হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement