Coronavirus

করোনা ঠেকাতে এ বার কয়লাগুঁড়ো মাখার গুজব

করোনাভাইরাস ঠেকাতে শনিবার নয়া গুজব ছড়াল হাওড়ার বেশ কিছু ব্লকে এবং পাশের জেলা হুগলির আরামবাগে। কয়লাগুঁড়ো গঙ্গাজলে গুলে মাখলেই নাকি করোনা ছুঁতে পারবে না!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৪:২৯
Share:

হিড়িক: বাটিতে কয়লা। —নিজস্ব িচত্র

গোমূত্রের পরে এ বার কয়লাগুঁড়ো!

Advertisement

করোনাভাইরাস ঠেকাতে শনিবার নয়া গুজব ছড়াল হাওড়ার বেশ কিছু ব্লকে এবং পাশের জেলা হুগলির আরামবাগে। কয়লাগুঁড়ো গঙ্গাজলে গুলে মাখলেই নাকি করোনা ছুঁতে পারবে না!

হাওড়া জেলায় এখনও কোনও করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলেনি। সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোরদার প্রচারও চলছে। এর মধ্যেই শনিবার ভোর হতে উদয়নারায়ণপুর, আমতা, জগৎবল্লভপুর, বাগনান, ডোমজুড়, উলুবেড়িয়ার বহু গ্রামে শাঁখ বাজতে থাকে। অনেক বাড়ির মহিলারা বাড়ির কোণের মাটি খুঁড়তে শুরু করে দেন। সেখানেই নাকি তাঁরা ‘কয়লা’ও পান! তারপরে তা গুঁড়ো করে গঙ্গাজলে গুলে শরীরে মেখেছেন অনেকে। কেউ কেউ কয়লা-গোলার ফোঁটাও লাগিয়েছেন কপালে। একই ছবি আরামবাগেও।

Advertisement

গোমূত্র খেলে করোনা সারবে, গেরুয়া শিবিরের কয়েকজনের এই নিদানে ক’দিন আগেই হইচই হয়েছে। দিল্লিতে কেউ কেউ গোমূত্র খেয়েছেন। কলকাতার জোড়াসাঁকো এবং ডানকুনিতেও গোমূত্র বিক্রি হয়েছে। কিন্তু হাওড়া বা আরামবাগে কয়লাগুঁড়ো মাখার গুজব কী ভাবে ছড়াল, তা জানা নেই প্রশাসনের। উদয়নারায়ণপুরের বিডিও রামজীবন হাঁসদা বলেন, ‘‘পুরোটাই গুজব। বর্তমান পরিস্থিতিতে কারা এ সব রটাচ্ছে, তা দেখা হচ্ছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উলুবেড়িয়ার কালীনগর শাখার সম্পাদক বিশ্বনাথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘কপালে কয়লার ফোঁটা লাগালে করোনা হবে না, এ সব কথার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। করোনা নিয়ে মানুষের মনে ভয় বাসা বেঁধেছে। তাই এই গুজব সহজেই মানুষ বিশ্বাস করছেন। বাড়ির কালো মাটিকেও কেউ কেউ কয়লাগুঁড়ো বলে মনে করছেন। আমরা সবাইকে বলছি, গুজব নয়, করোনা নিয়ে সরকার যে বিধিনিষেধের কথা বলছে, তা সবাই মেনে চলুন।’’

গুজব যে হারে ছড়ায় তাতে উদয়নারায়ণপুরের কুরচি, শিবপুর, খেমপুর, জগৎবল্লভপুর, শ্যামপুর, ডোমজুড়ের জয়চণ্ডীতলা, বাগপাড়া, দক্ষিণদাঁড়ি, আমতার সাঁপুড়দা থেকে একের পর এক কয়লাগুঁড়ো মাখার খবর আসতে থাকে। উদয়নারায়ণপুরের হরালি গ্রামের এক মহিলা বলেন, ‘‘সকালেই পরিবারের সকলের কপালে কয়লাগুঁড়োর ফোঁটা লাগিয়ে দিয়েছি।’’ ওই এলাকারই কার্তিক কর বলেন, ‘‘আমার বেশ কিছু পরিচিত এবং বন্ধুবান্ধব ফোন করেছিলেন। তাঁদের কথামতোই কয়লাগুঁড়ো গঙ্গাজলের সঙ্গে মিশিয়ে কপালে লাগাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন