প্রতীকী ছবি।
কাজ ছেড়ে দেওয়ায় তরুণী পরিচারিকাকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। শনিবার শ্রীরামপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জমিদার বাগানের ঘটনা। বুধবার ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর পরিজনরা। পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগও জানানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিদার বাগানে একটি বাড়িতে তিন আত্মীয়ের পৃথক সংসার। তুতুন বসু নামে বছর একুশের ওই তরুণী দীর্ঘদিন ধরেই তিনটি ঘরেই পরিচারিকার কাজ করতেন। তবে মাস তিনেক তিনি একটি ঘরের কাজ ছেড়ে দেন। অভিযোগ, পরিচারিকার উপর খেপে যান ওই দম্পতি। শনিবার অন্য দুই ঘরে কাজ করতে এলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ওই তরুণী শনিবার মার খেয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার সকালে মেয়েটির মা এবং কয়েক জন পড়শি তাঁকে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর উত্তম রায়ের কাছে নিয়ে যান। উত্তমবাবু পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ আসে। মেয়েটিকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক দেবপ্রসাদ ঘোষ জানান, মেয়েটি তাঁর উপর নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। তাঁর মানসিক ভীতি রয়েছে। এক জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, এক জন শল্য চিকিৎসক ও চিকিৎসককে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ওই তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। হাসপাতালের তরফেও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
মেয়েটির মা বলেন, ‘‘একজনের ঘরে কাজ ছেড়ে দেওয়াতেই মেয়েকে ওরা চুলের মুঠি ধরে খুব মেরেছে।’’ কাউন্সিলর উত্তমবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা মেয়েটার পাশে থাকব। ওর উপর হওয়া নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’ চন্দননগর কমিশনারেটের এক অফিসার বলেন, ‘‘ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ হলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’
অভিযুক্ত দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দুপুরে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে তালা ঝুলছে। স্থানীয় লোকেরা জানান, এ দিন বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরেই তাঁরা তালা দিয়ে বেরিয়ে যান। তার পরে স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল কর্মী ওই তালার উপরে আরও একটি তালা লাগিয়ে দেন। পাশের ঘরে থাকা দম্পতির এক আত্মীয়া বলেন, ‘‘মেয়েটি দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের বাড়িতে কাজ করে। ও আমাদের বাড়ির মেয়ের মতোই হয়ে গিয়েছে। তবে শনিবার কী হয়েছিল বলতে পারব না।’’