দুর্ঘটনায় মৃত্যু, দাবি অভিযুক্তের

কারখানায় শিশুর দেহ, ধৃত পড়শি

তবে, কী ভাবে শিশুটির মৃত্যু হল, তা পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত নানা অসংলগ্ন কথা বলছেন। কখনও দাবি করেন, মেশিনের তক্তা চাপা পড়ে শিশুটি মারা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মগরা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

মৃত: অংশু রাম। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির সামনে থেকে দু’বছরের শিশুটি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। বুধবার রাতে এলাকার একটি সেলাই মেশিন সারানোর কারখানা থেকে তক্তাচাপা অবস্থায় বাঁশবেড়িয়ার কলবাজার এলাকার অংশু রাম নামে ওই শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। তাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ গোলাম নামে এক পড়শি যুবককে। তিনি ওই কারখানাটির মালিক।

Advertisement

তবে, কী ভাবে শিশুটির মৃত্যু হল, তা পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত নানা অসংলগ্ন কথা বলছেন। কখনও দাবি করেন, মেশিনের তক্তা চাপা পড়ে শিশুটি মারা যায়। আবার কখনও দাবি করেন, খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে অংশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ। পুলিশ জানায়, দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।

হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।’’ কেন গোলামের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করল অংশুর পরিবার? শিশুটির জ্যাঠামশাই অশোক রাম বলেন, ‘‘গোলামের সঙ্গে আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। অংশুকে আমরা যখন খোঁজাখুঁজি করছিলাম, তখন গোলামও আমাদের সঙ্গে ছিল। কিন্তু একবারের জন্যেও জা‌নায়নি যে ওর কারখানাতেই শিশুর দেহ রয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলবাজার এলাকার বাসিন্দা জিতেন্দ্র রামের ছেলে অংশু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে খেলছিল। পরে আর তাকে খুঁজে পাননি বাড়ির লোকেরা। এলাকার লোকজন তাঁদের জানান, গোলামের সঙ্গে শিশুটিকে দেখা গিয়েছিল। সকলে গোলামকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। গোলাম তাঁদের জানান, শিশুটিকে তাঁর কারখানায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জরুরি ফোন আসায় শিশুটিকে ওই সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে ফের তিনি কারখানায় চলে যান।

অংশুর খোঁজ না-পেয়ে বাড়ির লোকেরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। মঙ্গলবার রাতে খোঁজাখুঁজির সময়ে গোলামও সকলের সঙ্গে সামিল হন। বুধবার রাতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোলামকে আটক করে। এর পরেই পুলিশি জেরায় গোলাম জানান, তাঁর কারখানাতেই শিশুটির দেহ রয়েছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। অংশুর পরিবারের লোকজন মৃতদেহ শনাক্ত করেন। গোলামের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। ধৃতকে বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন