দুর্ঘটনাগ্রস্ত: হেলে গিয়েছে মালগাড়ির কয়েকটি কামরা। নিজস্ব চিত্র
শিয়ালদহ থেকে ডানকুনির রেল ইয়ার্ডে ঢোকার সময় একটি মালগাড়ির তিনটি কামরা লাইনচ়্যুত হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে এই ঘটনার জেরে হাওড়া ও শিয়ালদহ মেন এবং কর্ড শাখায় একই সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুই শাখাতেই রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ বহু দূর পাল্লার ও লোকাল ট্রেন আটকে যায়। ঘরমুখো অফিস যাত্রীরা নাকাল হন।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, হাওড়ার ডিআরএম মানু গোয়েল-সহ দুই শাখার রেল কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। ঘটনায় অবশ্য কেউ আহত হননি। ধীরে ধীরে ৪২ কামরার ওই মালগাড়িটির ইঞ্জিন থেকে যে কামরাগুলি লাইনের উপর ছিল সেগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় লাইন থেকে নেমে যাওয়া কামরাগুলিকে সরানোর কাজ। হাওড়ার ডিআরএম বলেন, ‘‘ডানকুনিতে মালগাড়ি লাইনচ্যুত হওয়ায় রাজধানী-সহ বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন দেরিতে চলে। কেন এই ঘটনা হল তার কারণ জানতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
ঘটনাস্থলে কর্মরত রেলের এক পদস্থ কর্মী জানান, বিকেল চারটে ১৬ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে সিমেন্ট বোঝাই ওই মালগাড়িটি ডানকুনিতে হাওড়া-শিয়ালদহ লাইনে আউট সাইডিং দিয়ে মাল খালাস করতে যাচ্ছিল। সেই সময়ই ট্রেনটির ১৪, ১৫ এবং ১৬ নম্বর কামরাগুলি লাইন থেকে নেমে যায়।
ঘটনাস্থলে রেলের তরফে আলোর ব্যবস্থা করে মালগাড়ির কামরাগুলো সরানোর কাজ শুরু হয়। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে দুই শাখার রাজধানী এক্সপ্রেসকেই হাওড়া শাখা দিয়ে চালানো হয়। সন্ধ্যা সাতটার পরে শিয়ালদহের দিক থেকে প্রথম দুরন্ত এক্সপ্রেস চলাচল শুরু হয়। তবে রাত পর্যন্ত ওই লাইন সারানো চলছে।
ডানকুনিতে কর্মরত রেল কর্মী দেবাশিস ঠাকুরতা বলেন, ‘‘আওয়াজ এবং মাটির কম্পনে আমরা প্রথমে ভাবি ভূমিকম্প হয়েছে। সবাই বাইরে এসে দেখি মালগাড়িটি লাইন থেকে সরে গিয়ে কাত হয়ে গিয়েছে।’’
ডানকুনি রেল ইয়ার্ডে প্রতিদিন বহু মালগাড়ি ঢোকে সিমেন্ট, স্টোনচিপ এবং নানা সামগ্রী নিয়ে। তারপর শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক করে কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে সেই মাল খালাস করতে ছোটে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে এক ট্রাক চালক বলেন, ‘‘আমি এখান থেকে আজ সিমেন্ট নিয়ে বাঁকুড়া যেতাম। মালের ক্ষতি হয়নি ঠিক। কিন্তু কবে যে মাল পাব জানি না।’’ রেলের কর্তাদের অবশ্য আশ্বাস, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।