Tarakeswar

শ্রাবণী মেলা বন্ধ, হতাশ ব্যবসায়ীরা

লকডাউনের শুরু থেকে মন্দির বন্ধ ছিল। গত ২৪ জুন ভক্তদের জন্য মন্দিরের দরজা খোলা হয়। বিধি মেনে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০৪:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

গুরুপূর্ণিমার দিন থেকে তারকেশ্বরে শুরু হয় শ্রাবণী মেলা। এক মাস ধরে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী আসেন শিবের মাথায় জল ঢালতে।

Advertisement

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই দৃশ্য এ বার দেখা যাবে না করোনা পরিস্থিতির কারণে। ভাইরাসের ছোঁয়াচ এড়াতে তারকেশ্বর মন্দির বন্ধ। মেলাও বসছে না। জলযাত্রীদের ‘ভোলেবাবা পার করেগা’ ধ্বনি আর ব্যবসায়ীদের হাঁকাহাঁকিতে নয়, রবিবার শৈবতীর্থে গুরুপূর্ণিমা কার্যত নিঃশব্দে পেরিয়ে গেল।

লকডাউনের শুরু থেকে মন্দির বন্ধ ছিল। গত ২৪ জুন ভক্তদের জন্য মন্দিরের দরজা খোলা হয়। বিধি মেনে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরেই সংলগ্ন এলাকায় করোনা সংক্রমণের খবর আসে। ঝুঁকি না নিয়ে পরের দিন থেকে ফের মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Advertisement

বহু মানুষের আনাগোনা হওয়ায় চৈত্র এবং শ্রাবণী মেলার দিকে ব্যবসায়ীরা মুখিয়ে থাকেন। এ বার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাঁরা হতাশ। রবিবার তারকেশ্বর স্টেশন থেকে মন্দির পর্যন্ত রাস্তা ছিল কার্যত শুনশান। একই ছবি মন্দির চত্বরেও। তারকনাথ মোদক, চন্দন সরকার প্রমুখ ব্যবসায়ী জানান, সম্প্রতি মন্দির খোলায় তাঁরা কিছুটা আশার আলো দেখেছিলেন। আশা ছিল, কম পুণ্যার্থী এলেও মেলা বসবে। কিছু বিক্রিবাট্টা হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় তাঁরা বেকায়দায় পড়েছেন। অশোক সোম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘রেশনের চালের উপরে ভরসা করে চলছে। ভেবেছিলাম মেলা হলে পরিস্থিতি শুধরোবে। হল না।’’

বৈদ্যবাটীর নিমাইতীর্থ ঘাটে গঙ্গা থেকে জল তুলে অসংখ্য মানুষ হেঁটে তারকেশ্বরে আসেন। ঘাট চত্বর থেকে শুরু করে বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের দু’ধারে বিভিন্ন জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। বহু অস্থায়ী দোকান বসে। সেই ছবি উধাও। অন্যান্য বছর এই দিন নিমাইতীর্থ ঘাট গমগম করে। ভিড় সামলাতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ দিন রাস্তার দু’ধারে বাঁক, প্লাস্টিক, মাটির কলসি-সহ অন্যান্য সামগ্রী বা খাবারের দোকান ছিল ফাঁকা।

নিমাইতীর্থ ঘাট সংলগ্ন জায়গায় হোটেল চালান বাবলু নন্দন। তাঁর গলায় হতাশা, ‘‘চৈত্র মাসে করোনার জেরে মেলা বসেনি। শ্রাবণী মেলাও হল না। চৈত্র-বৈশাখ এবং এই সময়ের বেচাকেনায় আমাদের পেট চলে। কিন্তু এ বার রোজগারের রাস্তাই বন্ধ। কর্মচারীরাও বসা। সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে উঠেছে।’’ সঙ্কটে বৈদ্যবাটী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরাও। সমস্যা সমাধানে সরকার সাহায্য করুক, এই আর্জি জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন